ব্রাজিলে টিকা অনুমোদনের পর প্রয়োগ
ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি অনুমোদনের পর তার প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনভিসা গতকাল রোববার দেশটিতে দুটি টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
একটি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, অন্যটি চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের ‘করোনাভ্যাক’ টিকা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, আনভিসার বোর্ড সর্বসম্মতভাবে টিকা দুটির অনুমোদন দেয়। অনুমোদনের পরপরই টিকাদান কার্যক্রমের সূচনা করা হয়।
দেশটিতে প্রথম টিকা পেয়েছেন ৫৪ বছর বয়সী সাও পাওলোর নার্স মনিকা কালাজানস। তাঁকে ‘করোনাভ্যাক’ টিকা দেওয়া হয়।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এদুয়ার্দো পাজুয়েলো বলেছেন, সরকার সোমবার থেকে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে টিকা সরবরাহ শুরু করবে। বুধবার থেকে দেশজুড়ে টিকাদান শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। ব্রাজিল দিনে ১০ লাখ লোককে টিকা দিতে সক্ষম বলে জানান তিনি।
করোনায় বিশ্বে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ব্রাজিলের অবস্থান তৃতীয়। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ব্রাজিলের ওপর রয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। ব্রাজিলে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন ২ লাখ মানুষ।
সফলভাবে গণটিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একসময় ব্রাজিলের নাম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হতো। কিন্তু করোনার টিকাদান শুরুর ক্ষেত্রে দেশটি পিছিয়ে পড়ে। এ নিয়ে দেশটির সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে দ্রুত করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে তৎপর হয় ব্রাজিল সরকার।
ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ শুরু করে ব্রাজিল। এমনকি এই টিকার একটি চালান দ্রুত পেতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইতিমধ্যে ভারত থেকে ২০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার চালান এখনো হাতে পায়নি ব্রাজিল। তারা এই টিকার চালান পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
একই সঙ্গে ব্রাজিলের প্রাইভেট হেলথ ক্লিনিকের একটি সংগঠন ভারত থেকে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ টিকা কিনতে উদ্যোগী হয়েছে। ব্রাজিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ভ্যাকসিন ক্লিনিকস (এবিসিভিএসি) নামের সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা কিনতে আগ্রহী।
অন্যদিকে ব্রাজিলে চীনা করোনাভ্যাক টিকা উৎপাদন করছে দেশটির ভুটানটান ইনস্টিটিউট। ব্রাজিলে চালানো এই টিকার পরীক্ষায় প্রায় ৫০ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে।
টিকার কার্যকারিতার ন্যূনতম লক্ষ্যমাত্রা ৫০ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ব্রাজিলে চালানো পরীক্ষায় করোনাভ্যাকের টিকা সেই ন্যূনতম লক্ষ্যমাত্রাই অর্জন করেছে।
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো শুরু থেকেই করোনার ভয়াবহতাকে অবজ্ঞা করে আসছিলেন। এমনকি তিনি করোনার টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন।