ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ছয় অঞ্চলকে সংরক্ষিত ঘোষণা লুলার
ব্রাজিলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরা বসবাস করেন এমন ছয়টি অঞ্চলকে সংরক্ষিত হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় গতকাল শুক্রবার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ ঘোষণা দেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত অঞ্চল নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর নীতির উল্টো পথে হাঁটলেন লুলা।
ব্রাজিলে ৭৩০টি অঞ্চলে প্রায় ৩০০টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। সেগুলোর বেশির ভাগই আমাজন জঙ্গলে। তবে মাত্র ৪৩৪টি অঞ্চল ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বাকি অঞ্চলগুলোর দ্রুত স্বীকৃতি দিতে শুক্রবারের বৈঠকে লুলার প্রতি আহ্বান জানান ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেতারা। এ সময় লুলা বলেন, ‘আমি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একটি অঞ্চলও অরক্ষিত রাখব না।’
বৈঠকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি (সংরক্ষিত স্বীকৃতি দেওয়া) একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবে যতটা সম্ভব অঞ্চল যেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত হিসেবে আইনগত বৈধতা পায়, তা আমরা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০৩০ সাল নাগাদ যদি আমরা বন উজাড় শূন্যের কোঠায় আনতে চাই, তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের অঞ্চলগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।’
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের অঞ্চলগুলো সংরক্ষিত হিসেবে স্বীকৃতি পেলে, সেখানে যেকোনো ধরনের খনি নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। একই সঙ্গে এসব অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ ও গাছ কাটার জন্য সুনির্দিষ্ট অনুমতির প্রয়োজন পড়বে। এমনকি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য নন, এমন কেউ সেখানে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারবেন না।
নতুন যে ছয়টি অঞ্চল সংরক্ষিত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দুটির অবস্থান আমাজন জঙ্গলে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বড় ভূমিকা পালন করে আসছে এই জঙ্গল। ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ বছর ধরে আমাজন উজাড় ঠেকাতে বড় ভূমিকা রেখেছে সংরক্ষিত অঞ্চলগুলো।
এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের অঞ্চলগুলোকে নতুন করে সংরক্ষিত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। জনসমক্ষে ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যার তুলনায় তাঁদের অনেক বেশি জমি আছে। তাই সংরক্ষিত অঞ্চলের জন্য তিনি আর ‘এক সেন্টিমিটার’ জমিও ছাড় দেবেন না।