২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মোদিকে কী বার্তা দিতে চাইলেন আরএসএস প্রধান

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতফাইল ছবি

ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, কারও মধ্যে ঈশ্বর রয়েছে কি না, তা জনতাই বিচার করে। নিজেকে কখনো ঈশ্বর ঘোষণা করা যায় না।

গত বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের পুনেতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করে মোহন ভাগবত বলেন, ‘কেউ ঈশ্বরতুল্য কি না, মানুষই তা ঠিক করে। আমাদের এ কথা বলা ঠিক নয় যে আমি ভগবান হয়ে গেছি।’ তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ মনে করেন, চুপচাপ জীবন অতিবাহিত না করে আমাদের বিদ্যুতের মতো ঝলসে ওঠা উচিত। সেটা ঠিক নয়। বিদ্যুতের ঝলকানির পর অন্ধকার আরও গভীর হয়ে ওঠে। আমাদের তাই উচিত প্রদীপের মতো জ্বলা। কখনো বেশি আলো ছড়াবে, কখনো স্তিমিত থাকবে।’

সংঘচালক কেন ভগবানের কথা তুললেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে ঈশ্বরতুল্য দাবি করেছিলেন। তাঁর জন্ম যে ‘অজৈবিক উপায়ে’, তা জানিয়ে বলেছিলেন, মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর মনে হতো জৈবিকভাবে তাঁর জন্ম হয়নি। পরমাত্মা তাঁকে পাঠিয়েছেন। ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছেন বিশেষ বিশেষ কাজ করিয়ে নিতে। ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁর সেই যোগাযোগ সরাসরি। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁকে ডেকে নেবেন না।

মোহন ভাগবতের কটাক্ষের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী মোদি কি না, সেই জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে মোদিকে তিনি কোনো বার্তা দিতে চাইলেন কি না।

লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপি-আরএসএসের দূরত্ব আলোচনার মধ্যে উঠে এসেছিল। ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের সাহায্যে সংঘকর্মীদের সেভাবে এগিয়ে না আসা নিয়েও আলোচনা হচ্ছিল। সেই রাজনৈতিক জল্পনা জোরালো হয়েছিল ভোট চলাকালে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার মন্তব্যে। নাড্ডা বলেছিলেন, বিজেপি এখন সক্ষম। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। ভোটে জিততে বিজেপির এখন আর তাই সংঘের হাত ধরার প্রয়োজন নেই।

ভোটের ফলে বোঝা গিয়েছিল, সংঘের সাহায্য সেভাবে না পাওয়ায় বিজেপির কতটা লোকসান হয়েছিল। প্রায় তিন মাস পর সংঘ এখন প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে, বিজেপির সঙ্গে কিছু খটাখটি তাদের ছিল।

আরএসএসের প্রচার বিভাগের প্রধান সুনীল আম্বেকর গত সোমবার কেরালায় এক অনুষ্ঠানে সেই মতপার্থক্যের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এমন হয়েই থাকে। যেহেতু দুজনের লক্ষ্য ও বিশ্বাস এক, তাই তাদের একই আঙিনায় থাকা উচিত। মতপার্থক্য হলে আলোচনার মধ্য দিয়েই তা মেটানো হবে।

আম্বেকরের ওই মন্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যেই সংঘচালকের এই মন্তব্য বিজেপির প্রতি আরও এক সতর্কবাণী বলে মনে করা হচ্ছে। কোনো কোনো মহলের ধারণা, লোকসভা ভোটে আশানুরূপ ফল না হলেও বিজেপির শীর্ষ নেতাদের আচরণে তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। সেই কারণেই মোহন ভাগবতের এই সতর্কবার্তা।

লোকসভা ভোটের পর সংঘচালক বলেছিলেন, জনগণের প্রকৃত সেবক কখনো অহংকারী হন না। অন্যদের ক্ষতি করেন না। ঔদ্ধত্য দেখান না। জনজীবনে সব সময় শালীনতা বজায় রাখেন। তিনি স্বীকার করেছিলেন, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো শালীনতা বজায় রাখেনি।