৪৯৮ কোটি টাকায় সিটির নতুন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার কে এই রেইস
বল দখলের লড়াইয়ে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেন, বাতাসে বল ভাসতে থাকার মুহূর্তে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেন, পাসিংয়েও বেশ পটু, সঙ্গে চমৎকার নেতৃত্বগুণ—ম্যানচেস্টার সিটি তো এমন একজনকেই খুঁজছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁকে পেয়েও যাচ্ছে।
নাম তাঁর ভিতর রেইস। ব্রাজিলের এই ১৯ বছর বয়সী সেন্টার–ব্যাককে পালমেইরাস থেকে নিয়ে আসছে সিটি। বিবিসি, স্কাই স্পোর্টস, ডেইলি মেইল, গোল ডট কমসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনা শেষে রেইসকে ছাড়তে রাজি হয়েছে পালমেইরাস। তিনি এখন ম্যানচেস্টারের পথে। শারীরিক পরীক্ষার পর সব ঠিকঠাক থাকলে ইতিহাদে শিগগিরই তাঁকে নিজেদের ফুটবলার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেবে সিটি।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রেইসকে পেতে সিটিকে গুনতে হচ্ছে ৪ কোটি ইউরো বা ৩ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৯৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। দুর্দান্ত ফুটবলশৈলীর কারণে রেইসকে বিশ্ব ফুটবলের উদীয়মান তারকাদের একজন ভাবা হচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে তিনি ‘নতুন মারকিনিওস’ নামে পরিচিত।
রেইসের জন্ম ২০০৬ সালের ১২ জানুয়ারি ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের পৌর এলাকা সান্তানায়। ফুটবলে হাতেখড়ি পারাইবা রাজ্যের আর১০ একাডেমিতে। এই একাডেমির মালিক ব্রাজিলের সাবেক তারকা ফরোয়ার্ড রবিনিও। খেলোয়াড়ি জীবনে তিনিও দুই মৌসুম সিটিতে কাটিয়েছেন।
সেখান থেকে ২০১৬ সালে পালমেইরাস একাডেমিতে যোগ দেন রেইস। মূল দলে নাম লেখান গত বছর জুনে। তাঁর সঙ্গে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চুক্তি করেছিল পালমেইরাস। ক্লাবটির হয়ে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ২২ ম্যাচ। এর মধ্যে ব্রাজিলের শীর্ষ লিগে খেলা ১৮ ম্যাচেই ছিলেন শুরুর একাদশে। দলকে লিগের রানার্সআপ করতে দারুণ অবদান রেখেছেন। ব্রাজিলের জাতীয় দলে এখনো ডাক পড়েনি। তবে বয়সভিত্তিক দলের হয়ে (অনূর্ধ্ব–১৬ ও অনূর্ধ্ব–১৭) খেলেছেন ১৬ ম্যাচ।
শীর্ষ স্তরের ক্লাব ফুটবলে প্রথম মৌসুমেই আলো ছড়িয়ে ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর অনুসন্ধানী দলের নজরে আসেন রেইস। শুরুতে তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। পরে আগ্রহী হয়ে ওঠে সিটিও। কয়েক সপ্তাহ ধরে দর–কষাকষির পর চলমান শীতকালীন দলবদলেই তাঁকে পেতে যাচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরাই।
ম্যানচেস্টারে পৌঁছানোর পর সিটির প্রথম আগামী রোববার ইপসউইচ টাউনের বিপক্ষে। সব ঠিক থাকলে সেই ম্যাচের আগেই তিনি পেপ গার্দিওলার দলে যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রেইস তরুণ হওয়ার পরও তাঁকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিনতে সিটি কেন উঠেপড়ে লেগেছিল, তা কারও অজানা নয়। এবারের মৌসুমে গার্দিওলার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ডিফেন্ডারদের চোট।
চোটের কারণে একাদশের নিয়মিত দুই সেন্টার–ব্যাক জন স্টোনস ও রুবেন দিয়াজকে পাননি গার্দিওলা। মাঝে অসুস্থতার কারণে ডিফেন্ডার ও দলের অধিনায়ক কাইল ওয়াকারও খেলতে পারেননি। সেই ওয়াকার আবার কদিন আগে জানিয়ে দিয়েছেন, সিটিতে আর থাকতে চান না। শীতকালীন দলবদলেই তিনি যোগ দিতে পারেন ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে।
শীর্ষ ডিফেন্ডারদের অনুপস্থিতির প্রভাব মাঠের পারফরম্যান্সেও পড়েছে। ২০২৪–২৫ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এরই মধ্যে ৪২ গোল হজম করে ফেলেছে সিটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মৌসুমের মাঝপথে এর চেয়ে অনেক কম গোল খেয়েছিল তারা। রক্ষণভাগের দুর্ভোগ কমাতেই ভিতর রেইসের দিকে হাত বাড়াতে হয়েছে তাদের।