মায়ের মৃত্যুশোকে ছন্নছাড়া রোনালদিনিও
গত এক বছর কী টালমাটালই না কাটল রোনালদিনিওর।
প্রথমে ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে প্যারাগুয়েতে গিয়ে আটক হলেন, জেলের খাবারও খেতে হলো। বছরের বেশির ভাগ সময় ওই যন্ত্রণা বইতে হলো সাবেক এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে। কিছুদিন আগে খবর এল, প্রাণপ্রিয় মা দোনা মিগেলিনাকে হারিয়েছেন করোনাভাইরাসের ছোবলে। সব মিলিয়ে গত এক বছর সময়টাকে পারলে যেন স্মৃতি থেকেই মুছে ফেলেন সাবেক এই বার্সেলোনা তারকা। কিন্তু জীবনে আর সেই সুযোগ আছে কোথায়, যে তিতকুটে স্মৃতিগুলোকে ভুলে শুধু আনন্দের মুহূর্তগুলো মনে রাখা যায়?
সেটা করতে পারছেন না দেখেই হয়তো আস্তে আস্তে নিজের জীবনকে আরও বেশি ছন্নছাড়া করে ফেলছেন। বেপরোয়া জীবন যাপন করার জন্য রোনালদিনিওর ‘সুনাম’ আজকের নয়। সেই বার্সেলোনা, এসি মিলানের হয়ে খেলার সময়েই নিয়মিত নিজের উদ্দাম জীবনযাপনের জন্য খবরের কাগজের শিরোনাম হতেন। মা হারানোর পর সেই শোক কাটাতে আরও যেন বিপর্যস্ত করে ফেলছেন নিজেকে। আর রোনালদিনিওর এই জীবনযাত্রা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন তাঁর আশপাশের মানুষ, কাছের বন্ধুবান্ধব।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদপত্র এক্সত্রাকে এমনই এক বন্ধু জানিয়েছেন রোনালদিনিওর মাত্রাতিরিক্ত মাদকাসক্তির কথা, ‘প্রতিদিনই ও কোনো না কোনো পার্টি করছে। ও প্রতি সকালে ভদকা, হুইস্কি, জিন খাওয়া শুরু করে, থামে একদম পরের দিন সকালে। এমন না যে ও আগে থেকেই মাদকাসক্ত ছিল না, কিন্তু ওর এই মাদকাসক্তি আরও বেড়েছে ওর মায়ের মৃত্যুর পর।’
নিজের মা করোনার কারণে মারা গেছেন, তা–ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে তাঁর বিশেষ বিকার নেই বলে জানিয়েছেন আরও একজন বন্ধু, ‘নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্যও ও পার্টির আয়োজন করেছিল। প্রতিদিনই কিছু না কিছু হচ্ছেই।’
কিন্তু রোনালদিনিওর এই বেপরোয়া জীবন, এন্তার টাকাপয়সা খরচ করার জন্য আশপাশে ‘দুধের মাছি’দেরও কমতি হচ্ছে না বলে এক্সত্রাকে জানিয়েছেন একজন কাছের বন্ধু, ‘রিও দি জানেইরো থেকে বেশ কিছু বন্ধু ওর বাড়িতে গিয়েছে, কারণ রোনালদিনিও একাকিত্বে ভুগছিল। তখন সে বার-বি-কিউ করল, পার্টি করল। নাচানাচি করল। যা খুশি তা–ই করল। ও যেখানে থাকে সেখানে তাঁর প্রয়োজনের সবকিছুই আছে। আর ও অনেক বড় মনের মানুষ যেহেতু, সেহেতু অনেকেই তাঁর কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পায়। কিন্তু এসব করতে গিয়ে অনেক উটকো মানুষ ওর ঘাড়ে এসে জুটেছে। আমরা বুঝতে পারছি, এর মধ্যে তাঁরা অনেক ক্ষতি করে ফেলেছে ওর।’