রশিদের দুর্বলতা বুঝতে তাঁকে খেলতে হবে টেন্ডুলকারের
রশিদ খানের আবির্ভাব লেগ স্পিনকে যেন বদলে দিয়েছে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আফগানিস্তানের এই স্পিনারের সাফল্য অনুপ্রাণিত করছে বিভিন্ন দলকে, একাদশে রিস্ট স্পিনার নেওয়ার জন্য। এমন না যে রশিদ খান ব্যাটসম্যানদের কাছে মার খান না, তবে রশিদের জাদুকে পুরোপুরিভাবে নিষ্ক্রিয় করার সাধ্য এখনো বিশ্বের ব্যাটসম্যানদের হয়নি।
এবার আইপিএলের কথাই চিন্তা করুন, রশিদ জ্বলছেন আপন দ্যুতিতে। সেদিন দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ৪ ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন অজিঙ্কা রাহানে, শিমরন হেটমায়ার আর অক্ষর প্যাটেলের উইকেট তিনটি। বাকি ম্যাচগুলোয়ও ধারাবাহিক এই আফগান তারকা। ১৩ ম্যাচে এর মধ্যেই তুলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। রশিদের উত্থান ও ধারাবাহিকতা নজর এড়ায়নি ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারের। এবার রশিদকে খেলার টোটকা বাতলে দিলেন ব্যাটসম্যানদের, নিজের ইউটিউব চ্যানেলে।
রশিদের বলে রান নিতে ব্যাটসম্যানদের যে কত কষ্ট হয়, সেটা বোঝা গেছে আরেকটা তথ্যে। ১৩ ম্যাচে মোট ৫২ ওভার বল করে ১৪৮টি বলই ডট দিয়েছেন এই লেগ স্পিনার, অর্থাৎ প্রায় ২৫ ওভারে কোনো রান দেননি এই আফগানি। এখন ব্যাট হাতে মাঠে টেন্ডুলকারকে না দেখা গেলেও প্রায়ই তাঁর বিশেষজ্ঞ মতামত শোনা যায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, দেখা যায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। এবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও শোনালেন নিজের ধারণার কথা।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবারদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন টেন্ডুলকার। ফাইরুজ হোসেন নামের এক অনুসারী শচীনকে প্রশ্ন করেন, ‘স্যার, ব্যাটসম্যানরা কেন রশিদকে খেলতে পারে না? এটা কি তাঁর লেংথের জন্য? নাকি তাঁর বৈচিত্র্যের জন্য? নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?’
প্রশ্নের জবাবে নিজের মত দিয়েছেন ভারতের সাবেক এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান, ‘রশিদ একজন বিশ্বমানের বোলার। আমি ওর বিপক্ষে খেলিনি ঠিকই, তবে অন্য ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে যা শুনেছি আর নিজের চোখে যা দেখেছি, তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে, ও খুব ভালোভাবে ওর গুগলিটাকে আড়াল করে রাখতে পারে। ফলে ওর গুগলি ধরতে পারে অনেক কম ব্যাটসম্যান। বিশ্বমানের বোলারদের এটাই এক গুণ, যে তাঁরা কখন কোন বল করবেন, সেটা আগে থেকে বোঝা যায় না।’
রশিদ সম্পর্কে নিজের মত জানানোর আগে টেন্ডুলকার তাঁর সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘আমি কখনো রশিদকে খেলিনি। আমি ওকে শুধু বল করতে দেখেছি। আর দেখেছিও পেছন থেকে, বাকি সব দর্শকের মতো। ব্যাটসম্যানদের মতো সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়নি আমার। সামনে থাকলে বোঝা যায় যে বল ছোড়ার সময় ও কীভাবে ছাড়ে। বলের সিম বরাবর ঘোরালে বোঝা যায় সে লেগ স্পিন করছে, না গুগলি করছে। লেগ স্পিন করলে এক দিকে ঘুরবে, গুগলি করলে আরেক দিকে ঘুরবে। কিন্তু রশিদ বলের সিম সোজা রেখে বল করে না। ‘স্ক্র্যাম্বলড সিম’-এ বল করে। ফলে গুগলি হোক বা লেগ স্পিন হোক, ফ্লাডলাইটের বা দিনের আলোয় সিমের ঘূর্ণন সহজে বোঝা যায় না। ফলে ব্যাটসম্যানদের বুঝতে সমস্যা হয়ে যায়। আমি ব্যাট করলে ওর রানআপ আর হাতের মুভমেন্ট লক্ষ করতাম। ওর সঙ্গে কোনো দিন খেলতে পারলে হয়তো ওর দুর্বলতা আরও পরিষ্কার হবে আমার কাছে।’
কোনোভাবে শচীন-রশিদ দ্বৈরথ যদি দেখার সুযোগ হয়ও তাতে লাভ হবে ক্রিকেটপ্রেমীদেরই!