ইনজামামকে গুগলি মেরেই রশিদের ভাগ্য বদল
২০১৫ সালটা কখনো ভুলতে পারবেন না রশিদ খান। আফগানিস্তানের হয়ে সে বছর প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। কিন্তু সেটি ছিল শুধু টি–টোয়েন্টি সংস্করণে।
অথচ খ্যাতি কুড়ানো এ লেগ স্পিনারের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ওয়ানডে সংস্করণ দিয়ে। কীভাবে এই রূপান্তর ঘটল, সে কথাই এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন তিনি। তাতে জানা গেল, পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ইনজামাম–উল–হকেরও অবদান আছে এর পেছনে।
সেবার জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়েছিল আফগানিস্তান দল। শুধু টি–টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দলে ডাক পেয়েছিলেন রশিদ। দুই ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের আগে ছিল পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ।
দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচের আগে রশিদের ভাগ্য পাল্টে যায় মাত্র তিন বলের ব্যবধানে। নেটে তখন আফগানিস্তানের কোচ ইনজামামকে বল করেছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার। বলা ভালো, মাত্র এক ডেলিভারিতেই পাল্টে গিয়েছিল তাঁর ভাগ্য।
ক্রিকইনফোয় দেওয়া ভিডিও বার্তায় সেই ঘটনা জানিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এ তারকা। প্রথম ওয়ানডেতে হেরেছিল আফগানিস্তান।
সিরিজের আগের ঘটনা নিয়ে রশিদ বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে সফরে সে সময় শুধু টি–টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছিলাম। ওয়ানডে দলে ডাক পাইনি। ওয়ানডে দল আগেই জিম্বাবুয়ে পৌঁছে যায়। আমি (আফগানিস্তানে) কাবুলে অনুশীলন করছিলাম। ইনজি ভাই (ইনজামাম) দলকে বলেছিলেন, গোটা আফগানিস্তানে কি একটি লেগ স্পিনারও নেই? অন্তত একজন তো থাকা উচিত! জানি না কে যেন বলেছিল, একজন আছে কিন্তু সে শুধু টি–টোয়েন্টি বোলার, কারণ জোরে বল করে। ওয়ানডের জন্য ভালো হবে না। ইনজি ভাই তখন বলেছিলেন, ঠিক আছে, তাকে (জিম্বাবুয়েতে) ডাকো, ভালো না হলে টি–টোয়েন্টির জন্য রেখে দেব। কিন্তু ভালো হলে ওয়ানডেতে নেব।’
পরের ঘটনা বর্ণনা করে রশিদ খান বলেন, ‘রাতেই জানতে পারি আমাকে জিম্বাবুয়ে যেতে হবে, ওয়ানডের জন্য। উত্তেজনা কাজ করছিল, কারণ ওয়ানডে খেলারও সুযোগ পাব। জিম্বাবুয়েতে পৌঁছানোর পরের দিন ছিল প্রথম ওয়ানডে। তখন বুঝতে পারিনি আমি পরের দিন খেলার সুযোগ পাব না। সন্ধ্যায় দলীয় বৈঠক শেষে ইনজি ভাই বললেন, “আগামীকাল আমি খেলব না।” বললাম ঠিক আছে। তিনি বললেন, আমি আগে তোমার বোলিং দেখব, তারপর সিদ্ধান্ত নেব। বুঝে নিলাম, আমাকে আরও একটি পরীক্ষা দিতে হবে।’
সেই পরীক্ষা কেমন হয়েছিল, সে কথাও জানান তিনি, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা হারি, পরের দিন ছিল অনুশীলন। ইনজি ভাই নিজেই প্যাড পরে আমাকে খেলতে চাইলেন। সবাই জানে, (স্কয়ার) কাটে তিনি কত শক্তিশালী। প্রথম দুটি ডেলিভারিতে তিনি কাট করলেন। এরপর আমি ভাবলাম, একই জায়গায় বল ফেলে একটা গুগলি মেরে দেখি কী ঘটে। অনুশীলনের উইকেটে বল ভালো বাঁক নিচ্ছিল। আমি গুগলি মারার পর বল তার প্যাডে লাগে। তিনি আউট হননি তবে ব্যাটে খেলতে পারেননি। এরপর তিনি নেটের বাইরে এসে বললেন, আগামীকালের ম্যাচের জন্য তৈরি হও, তুমি দলের অংশ।’
অর্থাৎ, সেই একটি গুগলিতেই ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়ে যান রশিদ। তিনি জানান, এরপর থেকেই তিনি সবার সমর্থন পেয়েছেন, কখনো দল থেকে বাদ পড়েননি। দলের প্রধান স্পিনার হয়ে ওঠায় তাঁর আত্মবিশ্বাসও যায় বেড়ে।