আগে ধারণা ছিল হৃদ্রোগ বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ থাকলে বেশি হাঁটাহাঁটিঁ ও পরিশ্রম করা নিষেধ। এখন সেই ধারণা পাল্টেছে; বরং এমন অবস্থায় নির্দেশিত ব্যায়াম ও কায়িক শ্রম উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও হৃদ্রোগেীদের হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবনের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা করা ভালো।
কী ধরনের ব্যায়াম করবেন
হাঁটাহাঁটি বা জগিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, খেলাধুলা করা, বাগানে কাজ করা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা/হাইকিং ও নাচ।
কতক্ষণ ব্যায়াম করবেন
সপ্তাহে প্রতিদিন অথবা ন্যূনতম পাঁচ দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। টানা ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে বা এতে হৃদ্রোগীদের কষ্ট হলে ১০ মিনিট করে দিনে তিনবার ব্যায়াম করেও সমান সুফল পাওয়া যাবে।
ব্যায়ামের সুফল কী
আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি অনুযায়ী, মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার পারদ। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৩ থেকে ৬ ইউনিট ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৪ থেকে ১২ ইউনিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক থেকে তিন মাস নিয়মিত ব্যায়াম করার পর সুফল দেখা যায়। যত দিন ব্যায়াম করা যায়, তত দিন এই সুফল বজায় থাকে। হৃদ্রোগীদের নিয়মিত ব্যায়াম হার্টে কোল্যাটারাল রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তবে হৃদ্রোগের কারণে হার্ট ফেইলিউর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করা উচিত।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
হার্টের কোনো রোগ জানা থাকলে; যেমন হার্ট অ্যাটাক হলে।
ফুসফুসে কোনো রোগ থাকলে।
পরিবারের পুরুষ সদস্যের ৫৫ বছর বা মহিলা সদস্যের ৬৫ বছর বয়সের আগে হার্টের রোগ বা হঠাৎ মৃত্যুর ইতিহাস থাকলে।
নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকলে।
শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত না থাকলে।
কী লক্ষণ দেখা দিলে ব্যায়াম বন্ধ করবেন
বুকে, গলায়, চোয়ালে বা বাহুতে ব্যথা/চাপ অনুভব করলে।
অতিরিক্ত/অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট হলে।
মাথা ঘোরালে
হৃৎস্পন্দন/হার্টবিট অনিয়মিত হলে।
ব্যায়ামের অভ্যাস ধরে রাখার উপায়
আমরা অনেকেই ব্যায়াম শুরু করি; কিন্তু নানা কারণে ব্যায়ামের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি না। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি উপায় কাজে আসতে পারে:
ব্যায়ামকে মজার করে তুলুন।
দৈনন্দিন কাজের রুটিনের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যায়ামের সময় ঠিক করুন।
ব্যায়ামে কাউকে সঙ্গে নিন।
ডা. যতীন্দ্র নাথ সাহা, কনসালট্যান্ট, কার্ডিওলজি, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা