হুলা হুপ ঘোরাতে ঘোরাতেই কমবে ভুঁড়ি

নিয়মিত হুলা হুপ ঘোরালে ভুঁড়ি কমেছবি: প্রথম আলো

নামটাই মজার—হুলা হুপ। খেলার উপকরণটি নিয়ে আনন্দময় সময় কাটাতে পারেন সব বয়সী মানুষই। তবে হুলা হুপ ঘোরানোর কায়দাটা জানা থাকতে হবে ঠিকঠাক। এটি কিন্তু নিছক খেলাই নয়। নিয়মিত হুলা হুপ ঘোরানো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এই অভ্যাসে দেহের বিভিন্ন অংশের মেদ কমে।

নানা রকম শরীরচর্চা করেও কারও ভুঁড়ি কমতে চায় না। নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে ওজন কমলেও ভুঁড়ি কমছে না, এমন অভিযোগ থাকে অনেকেরই। ভুঁড়ি কমানো সত্যিই এক চ্যালেঞ্জ বটে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল বলছে, নিয়মিত হুলা হুপ ঘোরালে ভুঁড়ি কমে। হুলা হুপের নানান উপকারিতা সম্পর্কে জানালেন ঢাকার ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।

হুলা হুপ ঘোরালে কী হয়

হুলা হুপ ঘোরাতে হয় নিজের দেহকে কেন্দ্র করে। বুকের নিচ, পেট ও কোমরের ওপর—দেহের এসব অংশের চারপাশে ঘোরাতে হয় বলয়টি। এর জন্য দেহটা বেশ নিয়ন্ত্রিতভাবে ঘোরাতে হয়, যাতে হুলা হুপ নিচে পড়ে না যায়। নিয়মিত হুলা হুপ ঘোরালে দেহের এসব অংশের পেশির জোর বাড়ে। আর ভারসাম্যের চর্চাও হয়। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ভালো থাকে। এই ব্যায়াম করলে আপনি বেশ খানিকটা ক্যালরি পোড়াতে পারবেন। প্রতি ঘণ্টায় সাড়ে চার মাইল গতিতে হাঁটলে যে ক্যালরি পোড়ে, একই সময় সঠিকভাবে হুলা হুপ ঘোরালে প্রায় ততটাই ক্যালরি পোড়ে। এ ছাড়া আপনার পেট, কোমর ও নিতম্বের মেদ কমবে এতে। তবে ন্যূনতম ছয় সপ্তাহ ধরে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধঘণ্টা করে হুলা হুপ না ঘোরালে দৃশ্যমানভাবে মেদ কমে না। আর সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসও নিয়ন্ত্রণ করা চাই।

হুলা হুপ ঘোরানোর জন্য বিশাল কোনো জায়গার প্রয়োজন নেই
ছবি: প্রথম আলো

আরও কিছু ইতিবাচক দিক

হুলা হুপ ঘোরালে দেহের রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। রক্তের খারাপ চর্বির মাত্রা কমে। মস্তিষ্কের ওপরেও এর ইতিবাচক প্রভাব আছে। হুলা হুপ ঘোরানোর জন্য বিশাল কোনো জায়গার প্রয়োজন নেই। ঘরেই করা যায় এর চর্চা। আর এটি এমন আনন্দদায়ক এক ব্যায়াম, যা আপনার শরীরচর্চার উৎসাহ ধরে রাখতেও সহায়ক হতে পারে। এই ব্যায়ামে মানসিক চাপ কমে। আপনি শিশুর সঙ্গে খেলার ছলে সময় কাটাতে কাটাতেও ব্যায়ামটি করে ফেলতে পারবেন।

আরও পড়ুন

সবার জন্য কি নিরাপদ

পিঠ, কোমর কিংবা হিপ জয়েন্টের ব্যথায় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের ব্যায়াম করবেন না। হাড়ক্ষয়, হৃদ্‌রোগ কিংবা ফুসফুসের জটিল কোনো রোগ থাকলেও এ ধরনের ব্যায়াম শুরুর আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে নিন। কোনো শল্যচিকিৎসা হয়ে থাকলে ন্যূনতম কত দিন পর এ ধরনের ব্যায়াম করা যাবে, সেটিও জেনে নিতে হবে শল্যচিকিৎসকের কাছ থেকেই। কারও যদি আগে মেরুদণ্ড কিংবা হিপ জয়েন্টে কোনো আঘাত পাওয়া কিংবা শল্যচিকিৎসার ইতিহাস থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রেও এই ব্যায়ামের উপযোগিতা সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে এরপর শুরু করতে হবে। ব্যায়ামে অভ্যস্ত নন, এমন ব্যক্তির জন্য হুট করে হুলা হুপের চর্চা শুরু করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এমন ক্ষেত্রে অন্তত একটু দ্রুত হাঁটার চর্চা করে নিতে হবে। তবে কারও দেহের ভারসাম্যে সমস্যা থাকলে, পড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে এই ব্যায়াম করা যাবে না।

খেয়াল রাখুন

নিয়মিত চর্চা করতে চাইলে প্রথমে হুলা হুপ ঘোরানোর নিয়মকানুন ভালোভাবে শিখে নিন। বারবার হুলা হুপটি পড়ে গেলে আপনাকে বারবার নিচু হয়ে তা তুলতে হবে। এর ফলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। তা ছাড়া তাতে আপনি ধৈর্যও হারিয়ে ফেলবেন সহজে। কোন আকারের এবং কেমন ওজনের হুলা হুপ আপনার উপযোগী, সেটিও বুঝেশুনে নির্বাচন করুন।

আরও পড়ুন