আপনিও কি ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ভাবতেই থাকেন
কে কী বলল, এসব কি আপনার মাথার ভেতর ঘুরতেই থাকে? চট করে জেনে নেওয়া যাক, ছোট ছোট বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভাবনা রুখে দেওয়ার সাত উপায়।
আদতে কী ঘটল বা কে কী বলল, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো সে বিষয়ে আপনি কী ভাবছেন বা চিন্তা করছেন, সেটি। কে কী করল, বলল, কী ঘটল, তার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে সেই ঘটনায় আপনার প্রতিক্রিয়া আপনার নিয়ন্ত্রণে। সবকিছু আপনার মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য নয়। সব ছোটখাটো বিষয়ে আপনার এনার্জি, চিন্তা, সময়ের অপচয় করবেন না। আপনি কীভাবে, কোন বিষয়ে, কতটা প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। তাই মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষণ দিন। আপনার জীবনে যা কিছু আদতে গুরুত্বপূর্ণ, যা কিছু ইতিবাচক, যা কিছু সৃজনশীল, যা কিছু আপনাকে সামনে এগিয়ে নেয়, কেবল সেসবই স্থান দিন আপনার চিন্তায়।
১. আপনি একটা ছোট্ট বিষয় নিয়ে মাথার ভেতরে যত বিশ্লেষণ করতে থাকবেন, বারবার পরিস্থিতিটা ভাবতে থাকবেন, সেটি ততই বড় আর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন, যা নিয়ে ভাবছি, সেটা কি আমার নিয়ন্ত্রণে আছে? আমি এ মুহূর্তে কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারি? এখন পর্যন্ত আজকের দিনের সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা কী, অর্থাৎ আপনার মস্তিষ্ককে ভালো চিন্তার খোরাক জোগান।
২. কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটি নয়, বুঝতে পারেন না? নিজেকে প্রশ্ন করুন, যা নিয়ে ভাবছেন, সেটি কি ৭২ ঘণ্টা পরও প্রাসঙ্গিক? এক সপ্তাহ পরও আপনাকে প্রভাবিত করবে? যদি ‘না’ হয়, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
৩. ‘ওভারথিঙ্কিং’ চক্রাকারে ঘুরতে থাকে মাথার ভেতর। সেই চক্র ভেঙে দিতে আপনি উঠে দাঁড়ান। খানিকটা হেঁটে আসুন। নিজেকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ান। স্ট্রেচিং করুন। হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সাসাইজ করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে কয়েকবার করুন।
৪. আপনার মস্তিষ্ককে কোনো একটা বিষয়ে চিন্তা করার জন্য সময় বেঁধে দিন। সুশৃঙ্খলভাবে চিন্তা করার জন্য বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসুন। সেটি সমাধানে আপনার কী করণীয়, তা লিখে ফেলুন। আর যদি সেখানে আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো মানে নেই। সম্ভাব্য সমাধান লেখা শেষ করে বিষয়টিকে চলে যেতে দিন।
৫. সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভাবা বন্ধ করুন। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পক্ষে জোর করে যুক্তি দাঁড় করানো বন্ধ করুন; বরং নিজেকে বলুন, যদি সবচেয়ে খারাপ কিছুও ঘটে, আপনি সেটা নিজের সেরাটা দিয়ে মোকাবিলা করবেন।
৬. যেকোনো পরিস্থিতি ‘জুম ইন’ না করে ‘জুম আউট’ করুন। পাঁচ বছর পরও কি আপনি এ অবস্থায় থাকবেন? নিশ্চয়ই না। পাঁচ বছর পরও কি আপনি একই বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন? প্রশ্নই আসে না। আপনি যখন একটু দূর থেকে দেখেন, তখন ছোটখাটো বিষয় আপনাকে দুশ্চিন্তায় ফেলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
৭. কোনো একটি সমস্যার দুটি দিক থাকে। ‘প্যানিক মুড’ আর ‘প্রবলেম সলভিং মুড’। আপনি বরং দ্বিতীয়টাতেই মনোযোগ দিন।
নিজের মানসিক শান্তির চেয়ে বড় কিছু নেই। সেটি যেকোনো মূল্যে রক্ষা করুন।
সূত্র: হ্যাবিটস অন পারপাস