হাঁটা নাকি স্পট জগিং, ওজন কমানোর জন্য কোনটি ভালো

ব্যায়াম হিসেবে জগিংও কিন্তু হাঁটাহাঁটির মতোই নির্ঝঞ্ঝাট
ছবি: প্রথম আলো

শরীরটাকে সুস্থ রাখতে রোজ শরীরচর্চার বিকল্প নেই। ওজন কমাতেও শরীরচর্চা চাই-ই চাই। হাঁটাহাঁটি সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। বাড়তি কোনো যন্ত্রপাতি বা অনুষঙ্গের প্রয়োজন হয় না। ঠিকঠাক পোশাক আর মাপমতো জুতা পরে যে কেউই জুতসই একটা জায়গায় হাঁটা শুরু করতে পারেন।

এমনকি বাড়ির করিডরে আটপৌরে কাপড় পরে খালি পায়ে হাঁটলেও মেলে উপকার। ব্যায়াম হিসেবে জগিংও কিন্তু হাঁটাহাঁটির মতোই নির্ঝঞ্ঝাট। বড়সড় জায়গার অভাবে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে জগিংয়ের চর্চাও করা যেতে পারে, যাকে বলা হয় স্পট জগিং। ব্যায়াম হিসেবে স্পট জগিংও দারুণ।

তবে লক্ষ্য যদি হয় ওজন কমানো, তাহলে সহজ ব্যায়াম হিসেবে হাঁটা, নাকি স্পট জগিং, কোনটি ভালো? সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিলাম।

খালি পায়ে হাঁটলে মেলে উপকার
ছবি: প্রথম আলো

ওজন কমাতে হলে আপনাকে পর্যাপ্ত ক্যালরি পোড়াতে হবে। বুঝতেই পারছেন, ভারী ব্যায়ামে বেশি ক্যালরি পোড়ে। হাঁটা বা জগিং সেই অর্থে ভারী ব্যায়াম নয়। তবে এসব ব্যায়ামেও বেশ খানিকটা ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব। আপনি যত বেশি পরিশ্রম করবেন, তত বেশি ক্যালরি পোড়াতে পারবেন।

আপনার ওজন কত এবং কতটা সময় ধরে শরীরচর্চা করছেন, এগুলোও ক্যালরির হিসাব–নিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সব হিসাব মিলিয়ে ওজন কমানোর লক্ষ্যে হাঁটা কিংবা স্পট জগিং, যেকোনোটির চর্চাই করতে পারেন। জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।

জগিং করলে বেশ দ্রুত হৃৎস্পন্দন বাড়ে। অর্থাৎ জগিং একটি দারুণ ‘কার্ডিও এক্সারসাইজ’। একই জায়গায় দাঁড়িয়ে, অর্থাৎ স্পট জগিং করলেও ‘কার্ডিও এক্সারসাইজ’-এর উপকার মিলবে। ধরা যাক, আপনি এক বেলায় ১৫ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটলেন। আবার অন্য বেলায় ১৫ মিনিট স্পট জগিং করলেন। কিন্তু পরিশ্রমের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে স্পট জগিংয়ের মাধ্যমে একই সময়ে বেশি ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব হবে। অর্থাৎ ওজন কমাতে স্পট জগিং তুলনামূলক বেশি উপকারী।

জগিং একটি দারুণ ‘কার্ডিও এক্সারসাইজ’।
ছবি: প্রথম আলো

আপনি যদি খুব দ্রুত হাঁটেন, তাহলেও কিন্তু অনেকটা ক্যালরিই পোড়াতে পারবেন। স্পট জগিংয়ের চেয়ে এই ক্যালরি পোড়ানোর মাত্রাও খুব একটা কম নয়। আবার আপনি যদি মানসিক চাপে থাকেন, তাহলে কিন্তু প্রকৃতির মধ্যে হেঁটে এলে মানসিক চাপ কমতে পারে।

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারলে ওজন কমানোর অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ সহজ হয়। অর্থাৎ হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে আপনি অনেক ক্যালরি না কমাতে পারলেও এর পরোক্ষ প্রভাবে আপনার ওজন কমবে। তাই হাঁটলেও ওজন কমবে। আর হাঁটা নিঃসন্দেহেই সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম।

এদিকে জগিং বা স্পট জগিং করতে আপনাকে বেশ ফিট হতে হবে। ধরা যাক, আপনি বাড়তি ওজনের জন্য হাঁটুব্যথায় ভুগছেন; তাহলে কিন্তু চাইলেও আপনি খুব সহজে জগিং বা স্পট জগিং করতে পারবেন না। আবার আপনি যদি কেবল বাড়িতে স্পট জগিং করেন, তাহলে আপনার শরীরচর্চার সময়টা বেশ একঘেয়ে হয়ে উঠতে পারে।

আর আপনার লক্ষ্য যদি হয় অনেকটা ওজন কমানো, তাহলে কিন্তু কেবল হাঁটাহাঁটি কিংবা স্পট জগিংয়ের ওপর নির্ভর করলেই চলবে না; বরং এ ধরনের ব্যায়াম করে শরীর গরম করে নিয়ে এরপর ভারী ব্যায়ামের চর্চা করতে পারেন।