মোদির সম্মাননা ফিরিয়ে দিল ভারতের গ্রেটা
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মণিপুর রাজ্যে আট বছরের পরিবেশবাদী কর্মী লিসিপ্রিয়া কানগুজাম। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে গতকাল রোববার ভারত সরকারের দেওয়া একটি সম্মাননা সে প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্মাননা হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অ্যাকাউন্ট পরিচালনার প্রস্তাব দেওয়া হয় কানগুজামকে। এতে রাজি হয়নি সে। শুধু তা–ই নয়, এই ইস্যু নিয়ে রাজনীতি না করতে কানগুজাম কংগ্রেস দলের নেতা শশী থারুরকেও হুঁশিয়ার করেছে।
টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্দেশে কানগুজাম বলেন, ‘সম্মাননা দেওয়ার বদলে আমার কথা শুনুন।’
কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মাননা প্রত্যাখ্যানের পর কংগ্রেস কানগুজামের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। কংগ্রেস টুইটে বলে, নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভণ্ডামিকে বিদ্রূপ করেছে সাহসী পরিবেশবাদী কর্মী লিসিপ্রিয়া কানগুজাম। মোদির সম্মাননার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর কানগুজাম প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেয়, টুইটারে ক্যাম্পেইন চালানোর চেয়ে তার কথা শোনাটা বেশি জরুরি। তবে এই প্রশংসায় খুশি হয়নি কানগুজাম। সে টুইটে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ‘লোকসভা ও রাজ্যসভায় অধিবেশন চলাকালে কংগ্রেসের কতজন সদস্য তার দাবি তুলে ধরতে ইচ্ছুক?’ টুইটের শেষে কানগুজাম বলে, ‘কে আমার কথা শুনছে?’
এর কিছুক্ষণ পরেই কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ শশী থারুর টুইটে কানগুজামের উত্তর দেন। তিনি টুইট করেন, ‘তোমার কথা আমাদেরও।
কংগ্রেস বায়ুদূষণ রোধে কী কী পরিকল্পনা করছে তারও তালিকা দেন শশী থারুর।’
পাল্টা টুইটে কানগুজাম অভিযোগ করে, শশী থারুর তার প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি। সে আবার তার তিনটি দাবি জানায়। এগুলো হলো: ১) ভারতে জলবায়ু পরিবর্তন আইন পাস করা,
২) ভারতের সব স্কুল ও শিক্ষাব্যবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যসূচিতে বাধ্যতামূলক করা ও ৩) চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাস করতে হলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলকভাবে ১০টি গাছ লাগানোর নিয়ম চালু।
থারুর কানগুজামকে আশ্বস্ত করেন। থারুর বলেন, ‘তিনি কানগুজামের দাবিগুলোকে সমর্থন দিয়ে এবং তার দাবি পূরণে আশ্বাস দিয়ে খুব সুখী। পার্লামেন্টে দাবি উত্থাপন করার এটা অন্যতম সুযোগ।’
সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কানগুজামকে। রাজনীতিবিদদের তিনি টুইট উল্লেখ করেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনে আমাকে কখনো ব্যবহারের চেষ্টা করবেন না। আমি আপনাদের পক্ষে নেই।’
টুইটারের বায়োতে কানগুজামকে গৃহহীন শিশু ও পরিবেশকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।