খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় করা মামলা বাতিল

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। ফাইল ছবি

ফেসবুকে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর এক পোস্টকে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

মামলা বাতিল চেয়ে করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। আবেদনটি করেন চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি বিএনপির সাবেক নেতা তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে।

খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলাটি করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদের। এ মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট রুলসহ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। মামলাটির কার্যক্রম কেন বাতিল হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার।

পরে আইনজীবী চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট ৫৭ ধারায় করা মামলাটির কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। ফলে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন।

১৭ বছর পর খালাস পেলেন রশিদুজ্জামান মিল্লাত

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আট বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রশিদুজ্জামান মিল্লাতের করা আপিল মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায় বাতিল করে আজ এ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে মিল্লাতের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মিল্লাতের আপিল মঞ্জুর করে বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। ফলে ১৭ বছর পর মিল্লাত এই মামলা থেকে খালাস পেলেন।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৩ জুন রশিদুজ্জামান মিল্লাত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ওই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি বিচারিক আদালত মিল্লাতকে দুই ধারায় এক বছর ও সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৭ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁর আপিল মঞ্জুর করে খালাস দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১২ সালে লিভ টু আপিল করে। এর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে আপিল পুনঃশুনানি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হলো।

এ্যানির ছয় মামলার কার্যক্রম বাতিল

পুলিশের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে করা পৃথক ছয়টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া। পরে আইনজীবী মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে ২০১০ সালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় পাঁচটি ও ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা হয়। রুলের শুনানি শেষে ছয়টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।