২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

দূরপাল্লার বাস কম, গন্তব্যে যেতে না পেরে যাত্রীদের ভোগান্তি

হরতালে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে কম। অলস সময় পার করছেন কাউন্টারের কর্মীরা। অনেক কাউন্টারে কর্মীরা ছিলেন না। আজ সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকার আবদুল্লাহপুর মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

কারও হাতে ব্যাগ, কারও কোলে শিশু, কারও–বা মাথায় বস্তা। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে অপেক্ষা করছেন বাসের জন্য। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বাস নেই। কেউ কেউ বিকল্প যানবাহন খুঁজছেন। কেউবা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা শেষে ফিরে যাচ্ছেন মন খারাপ করে।

আজ সোমবার দুপুরে এই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর আবদুল্লাহপুর মোড়ে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিএনপির হরতাল। এ কারণে সকাল থেকেই সড়কে দূরপাল্লার বাস তেমন চলাচল করছে না। বিশেষ করে ময়মনসিংহগামী বাস চলাচল খুবই কম। এতে যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। আর গাড়ি কম থাকায় কাউন্টারের কর্মীরাও পার করছেন অলস সময়।

আবদুল্লাহপুর মোড়ে ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলার বাস পাওয়া যায়। প্রতিদিন ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয় বাস চলাচল, যাত্রী ও সাধারণ মানুষের হাঁকডাক। কিন্তু আজ বেলা ১১টায় গিয়ে দেখা যায়, মোড়টিতে দূরপাল্লার চলাচল খুবই কম। মালপত্র নিয়ে বাসের কাউন্টারে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। অনেকক্ষণ পরপর একটি-দুটি বাস আসছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী বাড়ি যাবেন নাসিমা আক্তার। বেলা ১১টায় এসেছেন আবদুল্লাহপুর মোড়ে। জামালপুরগামী রাজিব পরিবহের একটি টিকিট কাটেন তিনি। কিন্তু বাস নেই। প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষার পরও বাস পাচ্ছিলেন না তিনি। একপর্যায়ে মন খারাপ করে বসেছিলেন কাউন্টারের পাশে একটি খালি বেঞ্চে।

নাসিমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার দক্ষিণখানে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলাম। গতকাল রোববার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হরতালে বাস চলবে না, এই ভেবে গতকাল বাসা থেকে বের হইনি। এর মাঝে আজ একজন পরামর্শ দিলেন আবদুল্লাহপুর থেকে জামালপুরের বাস পাওয়া যাবে। তাই গাড়ি ভাড়া করে এখানে আসি। এখানে আসার পর দেখি অবস্থা আরও বেশি খারাপ। টিকিট কাটার পর ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে আছি। কিন্তু কোনো বাস নেই। বাড়ি যাওয়াটা জরুরি। আত্মীয়ের বাসায়ও ফিরে যেতে পারছি না।’

একই ভোগান্তির কথা জানালেন ময়মনসিংহের চরপাড়াগামী যাত্রী মোসাম্মত ইসমত আরা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর হঠাৎ এক–দুইটা বাস আসছে। তা–ও যে বাস চাই, সেই বাস না। কাউন্টার মাস্টারকে বারবার বাসের কথা জিজ্ঞেস করলেও কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারছেন না। বাসের অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’  

যাত্রীদের পাশেই দেখা যায়, বাস কাউন্টারের কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রোববার থেকে হরতাল চলমান থাকায় জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়ে অনেক মালিক বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। বাস না চলায় তাঁরাও অলস সময় পার করছেন।

মোহাম্মদ আলী নামের এক কাউন্টার মাস্টার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখান থেকে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিদিন ২০-২৫টি কোম্পানির ২ হাজার বাস চলাচল করে। হরতালের কারণে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩৩-৪০০তে। গড়ে এক ঘণ্টা পরপর এক-দুটি বাস আসছে। এসব কারণে অপেক্ষায় থেকে থেকে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। কেউ কেউ ফিরে যাচ্ছেন বিরক্ত হয়ে।’