হরতাল

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনকে হরতাল বলা হয়। হরতাল শব্দটি ভারতের গুজরাটি শব্দ ‘হাড়তাল’ থেকে এসেছে। বাংলা একাডেমির ‘ব্যবহারিক বাংলা অভিধান’-এ হরতাল সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘ধর্মঘট; বিক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য যানবাহন,হাট-বাজার, দোকানপাট, অফিস-আদালত ইত্যাদি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করা।’
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে প্রথম হরতাল শব্দটি ব্যবহার করেন মহাত্মা গান্ধী। কোনো ধরনের দাবি আদায়ের জন্য বা ওই দাবির গুরুত্ব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বোঝাতে হরতাল আহ্বান করা হয়। পরিবহন ভাড়া কমাতে বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হরতাল আহ্বান করা হয়।
এ ছাড়া শিল্পকারখানা বন্ধ, শ্রমিক ছাঁটাই, রাজনৈতিক দাবি আদায়সহ বিভিন্ন কারণে হরতাল ডাকা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দল, পক্ষ বা সংগঠন হরতাল আহ্বান করে থাকে।
অনেক ক্ষেত্রে অরাজনৈতিক সংগঠনও সরকারের কোনো কোনো সিদ্ধান্ত বা কাজ বাতিলের দাবিতে হরতালের ডাক দিতে পারে।
হরতালের সময় সব কর্মক্ষেত্র, দোকান, আদালত বন্ধ থাকে। তবে সাধারণত অ্যাম্বুলেন্স, দমকল বাহিনী, গণমাধ্যম হরতালের আওতার বাইরে থাকে।
শান্তিপূর্ণ হরতাল চলাকালে রাজপথে মিছিল, সমাবেশ করে থাকে এর আহ্বানকারীরা। তেমনি করে সরকারও হরতালের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করে থাকে। তাই অনেক সময় এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হরতাল সহিংস রূপ নেয়।
বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব দেশে হরতালের মতো কর্মসূচি ডাকা হয়ে থাকে। তবে রাজনৈতিক দাবি আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশেই হরতালের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।

আরও