নোয়াখালীতে ‘চোর সন্দেহে’ আরেক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

মঙ্গলবার রাতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকে চোর। বুধবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাড়িতে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুই দিনের মাথায় ‘চোর সন্দেহে’ আরেক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাড়িতে গণপিটুনিতে ওই ব্যক্তি নিহত হন। খবর পেয়ে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানা-পুলিশ নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে।

নিহত ব্যক্তির নাম মোশারফ হোসেন (৪৩)। তাঁর বাড়ি উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় ও ফেনীতে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের ১০টি মামলা আছে। চুরির মামলায় তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন।

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর ভোরে বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ভূপতিপুর গ্রামে চোর সন্দেহে নাসির উদ্দিন ওরফে মাসুদ (২৫) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির উদ্দিনের বাড়ি আলাইয়াপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে।

রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ইদ্রিছ বলেন, আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে চোর নিহত হওয়ার বিষয়টি জেনে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ সকাল সাড়ে আটটার দিকে এসে লাশটি উদ্ধার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মালয়েশিয়া প্রবাসী সাইফুদ্দিনের বসতঘরে সিঁধ কেটে দুজন চোর ভেতরে ঢোকেন। তখন প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা কেউ ঘরে ছিলেন না। তাঁরা আগের দিন পাশের সেনবাগ উপজেলার আত্মীয়র বাড়িতে ছিলেন। প্রবাসী সাইফুদ্দিনের বসতঘরের ভেতর থেকে ‘আওয়াজ’ শুনতে পান একই বাড়ির বাসিন্দা জুনায়েদ (৩৪)। তিনি বিষয়টি সাইফুদ্দিনের বড় ভাই বাহার উদ্দিন মিজানকে (৫৫) মুঠোফোনে জানান। তখন মিজান তাঁর বড় ভাইয়ের ঘরের দিকে এগিয়ে গেলে বাহারকে ছুরিকাঘাত করে চোর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ওই ব্যক্তিকে ধরে পিটুনি দেন। এতে ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। পরে সকালের দিকে ওই বাড়িতেই তিনি মারা যান।

ওই বাড়ির বাসিন্দাদের ভাষ্য, ওই চোরকে আটককালে তাঁর সহযোগীরা বসতঘর থেকে স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, গণপিটুনিতে সন্দেহভাজন চোর হত্যার শিকার হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে। নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নোয়াখালী ও ফেনীর বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা আছে।

আরও পড়ুন