কথায় আছে ‘চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ে ধরা’। চুরি মানে না বলে অন্যের জিনিস নেওয়া। পেশাদার চোরেরা একে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে এবং বিদ্যা হিসেবে শেখাতে পারে।
চোর শব্দটি এসেছে সংস্কৃত চৌর, তস্কর শব্দ থেকে। মূলত চুরি বা চৌর-কার্য বা হরণ বা আত্মসাত্ যে করে সে চোর। অন্যভাবে বলতে গেলে চৌর্যবৃত্তি যার পেশা সে পেশাদার চোর।
আরেকটু বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে চুরি মানে হতে পারে ছলে-বলে-কৌশলে মালিকের বা তত্ত্বাবধায়কের অজ্ঞাতে অথবা ব্যক্ত ইচ্ছার বিরুদ্ধে দ্রব্য গ্রহণ, ব্যবহার, বিক্রয়, বিলোপ, লোপাট, কুক্ষিগত, বেদখল করা বা অনধিকার নিয়ন্ত্রণ।
চুরির ধরন বা প্রকার অনুসারে এটাকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
সিঁধ কেটে যারা চুরি করে তারা সিঁধেল চোর। এ পদ্ধতিতে চুরি করা সবচেয়ে কঠিন। সিঁধকাঠি অর্থাত্ শাবল বা খুন্তির মতো জিনিস দিয়ে এসব চোর মাটির কাঁচাবাড়ি বা দেয়ালে গর্ত বা সুড়ঙ্গ করে। এরপর ঘরের ভেতরে গোপনে প্রবেশ করে চুরি করে। বর্তমানে এ ধরনের চুরি অনেকটাই কমে গেছে।
সিঁধ কাটা থেকে ছ্যাঁচড় বা ছিঁচকে চোর শব্দ এসেছে। শব্দটি ছোটখাটো চুরি অর্থেও ব্যবহার হয়। চুরির করতে ব্যর্থ হয়ে ভাঙচুর ইত্যাদি ক্ষতি করলে তাকেও ছ্যাঁচড়ামো বলে।
এক চোরের চোরাই মাল আরেকজন চুরি করলে দ্বিতীয়জনকে বাটপার বলা হয়। বাগধারা আছে, চোরের ওপর বাটপারি।
জুয়াচোর থেকে এসেছে জোচ্চুরি শব্দটি। তবে শুধু জুয়া খেলায় নয়, যেকোনো প্রতারণাকে জোচ্চুরি বলে। অন্যের স্বাক্ষর নকল করে যেকোনো অপকর্ম করা হলো সই চুরি। ইন্টারনেটে অন্যের তথ্য চুরি করাকে বলে হ্যাকিং।
অনেক চোর রয়েছে স্বভাবের বাইরে প্রয়োজনের কারণে চুরি করে। কিন্তু সমাজে অনেক ধনী বা সামর্থ্যবান মানুষ রয়েছেন তাঁদের মধ্যে ছোটখাটো চুরি করা একধরনের অদম্য ইচ্ছা রয়েছে। নিজের অজান্তেই তাঁরা চুরি করেন। এটার একধরনের রোগ, যাকে বলে ক্লেপ্টোম্যানিয়া।