অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষণা
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিল যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর চালানো সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার এ ঘোষণা দেন। খবর আল–জাজিরা ও এএফপির
ওয়াশিংটন ডিসিতে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, হলোকাস্ট (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদিদের ওপর গণহত্যা) ছাড়াও বিশ্বে সাতটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ অষ্টম গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হলো। কারণ, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে আমি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।
এর আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
সোমবার ওই সিদ্ধান্তেরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন ব্লিঙ্কেন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিল।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সফরের সময় বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণ গণহত্যা কি না, তা খুবই সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়ন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মুখে লাখো রোহিঙ্গা মুসলিম প্রাণ বাঁচাতে সেই দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়ন, জ্বালাও–পোড়াওয়ের মুখে লাখো রোহিঙ্গা মুসলিম প্রাণ বাঁচাতে সেই দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়েছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনো সংজ্ঞা নেই।