অস্ট্রেলিয়ায় শেষ হচ্ছে রাজ্য সংসদ নির্বাচন
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত সিডনির রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসে (এনএসডব্লিউ) ৫৭তম রাজ্য সংসদ নির্বাচন শুরু হয়েছে। দেশটির আসন্ন ৪৬তম জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই শেষ রাজ্য সংসদ নির্বাচন। এতে বর্তমান লিবারেল ও ন্যাশনাল পার্টির জোট সরকারের বিপক্ষে জয়ের জন্য লড়ছে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি।
সরকারি দলের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর (প্রিমিয়ার) আসনের জন্য লড়বেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। তাঁর বিরোধিতা করছেন লেবার পার্টির নেতা মাইকেল ডেলি। এখন পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ভোট দিতে এসে এক বৃদ্ধের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের সেন্ট্রাল কোস্ট এলাকায় পোলিং বুথ কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এনএসডব্লিউ রাজ্য সংসদ শেষ হওয়ার পরপরই দেশটির নতুন সরকার গঠনের নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল থেকেই ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিস ও বিপক্ষ নেতা মাইকেলসহ সব প্রার্থীই নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করছেন। ভোটারদের সঙ্গে দেখা করে নিজ দলের জন্য ভোট চাইতে দেখা যায় তাঁদের। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একটি নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছেন। এ সময় তাঁকে স্বেচ্ছাসেবীর পোশাক পরে ভোটারদের বিভিন্ন সেবা দিতে দেখা গেছে। তিনি নির্বাচনী ফলাফলে ভালো কিছু আশা করছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। তবে আজ প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিসের সঙ্গে দেখা করেননি।
অস্ট্রেলিয়ার শেষ রাজ্য নির্বাচন হওয়ার পাশাপাশি এনএসডব্লিউ রাজ্য নির্বাচন দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনও। এই রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলকে ভিত্তি করে ধারণা করা হয় কোন দল গঠন করবে আসন্ন সরকার। রাজ্যের ৯৩টি আসনের মধ্যে জোট সরকারের দল লিবারেলে ৫২টি আসনে রয়েছে। চলতি নির্বাচনে লিবারেল যদি ৬টির বেশি আসনে হেরে যায় তবে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। আর ক্ষমতায় আসতে বিরোধী দল লেবার পার্টির জিততে হবে ১৩টি আসনে। রাজ্য নির্বাচনে সিডনির কুজি, ব্যালমেইন, ওয়েস্টার্ন সিডনিসহ বেশ কয়েকটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। গুরুত্বপূর্ণ আসনের মধ্যে আরও রয়েছে পেনরিথ, গোলবার্ন, ওয়াটলে, লিজমোর, কফস হারবার, বারওন, ডাব্বো ও ওয়াগা ওয়াগা।
এনএসডব্লিউ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। গতবারের নির্বাচনে ৯০ শতাংশ ভোটার ভোট দেন। অস্ট্রেলিয়ায় নাগরিকদের ভোট প্রদান করা বাধ্যতামূলক। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়া ছাড়াও বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট এবং টেলিফোনে আই-ভোট এবং ডাকযোগে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আজ স্থানীয় সময় বেলা ১টা পর্যন্ত আই-ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তথ্যমতে, আগাম ভোট দিয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি ভোটার। তাঁদের বেশির ভাগই রাজ্য এবং দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সাধারণত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরের দিন ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।