অত্যাচারিতদের কাছে ক্ষমা চাইলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনফাইল ছবি: রয়টার্স

রাষ্ট্র বা গির্জার কাছে সহায়তা চাইতে গিয়ে হেনস্তা আর অত্যাচারের শিকার হওয়া লাখো মানুষের কাছে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন।

আজ মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। গ্যালারিতে বসেছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। যাঁদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন, আশ্রয়হীন হয়ে কিংবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা গির্জার কাছে সহায়তা চাইতে গিয়ে তাঁরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাঁদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের সরকার এসব অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের প্রতিবেদনে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্থা-অত্যাচারের শিকার হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর পরই নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন নিজের এবং দেশটির সাবেক সরকারগুলোর পক্ষ থেকে আজ অত্যাচারিতদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইলেন।

পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী লুক্সন বলেন, এমন ঘটনা যাতে আর কখনোই না ঘটে, সে দিকে নজর দেওয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।

অভিযোগ অনুযায়ী ১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। বলা হয়েছে, অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রচুর শিশু রয়েছে। তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়েছে। অনেক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, সরকারি ও গির্জার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে এসব ঘটনা ঘটায় অনেকে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেননি।

কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মূলত বর্ণবাদের কারণে এসব অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন মাওরি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী লুক্সন জানান, কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনোই না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে।