২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সৌদির বিষয়ে সোমবার ঘোষণা দেবেন বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ছবি: এএফপি

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বহুল কাঙ্ক্ষিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবের বিষয়ে আগামীকাল সোমবার একটি ঘোষণা দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল শনিবার তিনি এ কথা জানিয়েছেন। আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত শুক্রবার বাইডেন প্রশাসন খাসোগি হত্যার শ্রেণিবদ্ধ গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, খাসোগি হত্যার বিষয়টি সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জানতেন। এই হত্যায় তিনি সরাসরি অনুমোদন দিয়েছিলেন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই সৌদির ৭৬ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

খাসোগি হত্যায় সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করা হলেও তাঁকে কোনো শাস্তি না দেওয়ায় বাইডেন প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। এ নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। এই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, সৌদির যুবরাজের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কঠোর হওয়া উচিত।

সৌদির কার্যত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে বাইডেনের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, তাঁরা সাধারণত সৌদি আরবের ব্যাপারে কী করতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে সোমবার একটি ঘোষণা দেওয়া হবে।

সৌদির ব্যাপারে ওয়াশিংটনের ঘোষণায় ঠিক কী থাকছে, তা বিস্তারিত বলেননি বাইডেন।

তবে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, সৌদির বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন থেকে সোমবার নতুন কোনো তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ আসবে বলে তিনি মনে করেন না।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (বাঁয়ে) ও সাংবাদিক জামাল খাসোগি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার সৌদি আরব একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যায় সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে যে কথা বলা হয়েছে, তা নাকচ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনে সৌদি আরবের নেতৃত্ব সম্পর্কিত নেতিবাচক, মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য মূল্যায়ন সৌদি সরকার পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিবেদনটি ভুল তথ্য ও সিদ্ধান্তে ভরা। আগের মতোই সৌদি আরব দাবি করেছে, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।

খাসোগি ছিলেন ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক। তিনি সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক ছিলেন।

খাসোগি তাঁর বিয়ের জন্য কাগজপত্র আনতে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে যান। সেখানে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর লাশ টুকরা টুকরা করে গুম করা হয়। তাঁর দেহাবশেষ এখনো পাওয়া যায়নি।

খাসোগি হত্যার পরপরই অভিযোগ ওঠে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্মতি ও নির্দেশ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো সম্ভব ছিল না। তবে সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

খাসোগি হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় বাইডেন বলেছিলেন, খাসোগি হত্যায় ট্রাম্প যে পথে হেঁটেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সেই পথে হাঁটবেন না। সৌদির জ্যেষ্ঠ নেতাদের শাস্তি দেবেন তিনি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বাইডেন তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বলেই মনে হচ্ছে।