রাশিয়ার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করছেন ট্রাম্প
রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র চুক্তি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া চুক্তিটি ‘লঙ্ঘন’ করছে দাবি করে তা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) নামের মাইলফলক চুক্তিটি ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গর্ভাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান।
আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ওই চুক্তিটির মাধ্যমে ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে মাঝারি দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়।
গতকাল শনিবার নেভাদায় নির্বাচনী সমাবেশ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানে আমাদের অনুমতি নেই, সেখানে রাশিয়াকে আমরা অস্ত্র ব্যবহার করতে দিতে পারি না। আমি জানি না, কেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা করেননি বা প্রত্যাহার করে নেননি। তারা (রাশিয়া) বহু বছর ধরে এই চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।’
বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ২০১৪ সালে আইএনএফ লঙ্ঘন করে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার অভিযোগ এনেছিলেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তবে ইউরোপীয় নেতাদের চাপের কারণে তিনি ওই চুক্তি প্রত্যাহার করা থেকে সরে যান। চুক্তি বাতিল হলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আবার শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন ইউরোপীয় নেতারা।
এদিকে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বে একক ক্ষমতার স্বপ্ন থেকে যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে তারাই থাকবে বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, চুক্তি ভঙ্গ করে রাশিয়া নতুন মাঝারি মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র নভেটর ৯এম৭২৯ তৈরি করেছে, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে তা এসএসসি-৮ নামে পরিচিত। এ ঘটনায় খুব কম সময়ের মধ্যে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে পারমাণবিক ধর্মঘট চালু হতে পারে। চুক্তি ভঙ্গের বিষয়টি অস্বীকার করলেও রাশিয়া তাদের এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে খুব কমই কথা বলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া এই অস্ত্রগুলো সাধারণ বাহিনীগুলোর জন্য বিকল্প সস্তার অস্ত্র হিসেবে দেখছে।
শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা অঞ্চলে চীনের সামরিক উপস্থিতির বিস্তৃতির পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন ওই চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ নয়, সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছাড়াই তারা মাঝারি দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন এ সপ্তাহের শেষে মস্কোতে অনুষ্ঠেয় এক আলোচনা সভায় চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহারের বিষয়টি জানাতে পারেন।