যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিলে বিক্ষোভকালে দুই পুলিশ গুলিবিদ্ধ
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে বিক্ষোভের সময় দুজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ব্রিওনা টেলর নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে হত্যার ঘটনায় গ্র্যান্ড জুরি কাউকে অভিযুক্ত না করার পর লুইসভিলে বিক্ষোভ দেখা দেয়।
হাসপাতালকর্মী ব্রিওনা টেলরকে (২৬) গত ১৩ মার্চ কেন্টাকিতে তাঁর নিজ বাড়িতে গুলি করে মেরে ফেলা হয়। তাঁকে একাধিক গুলি করে পুলিশ। লুইসভিলের পুলিশপ্রধান জানিয়েছেন, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের যে দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাঁদের জীবনহানির আশঙ্কা নেই। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লুইসভিলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া সেখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্রেট হ্যানকিসন নামের পুলিশের এক কর্মকর্তাকে গ্র্যান্ড জুরি অভিযুক্ত করলেও এই অভিযোগের সঙ্গে ব্রিওনা হত্যার কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মূলত প্রতিবেশীর বাড়িতে গুলিবর্ষণের (ওয়ানটন এনডেঞ্জারমেন্ট। আর অন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি।
কেন্টাকির আইন অনুযায়ী, কেউ যদি মানুষের জীবনের মূল্য সম্পর্কে চরম উদাসীনতা দেখান, তবে তিনি ‘ওয়ানটন এনডেঞ্জারমেন্ট’ অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন। এ ধরনের ঘটনায় পাঁচ বছরের সাজার বিধান রয়েছে।
ব্রিওনা টেলরের স্বজন ও অধিকারকর্মীরা তিনজন শেতাঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার আহ্বান জানান। কিন্তু আদালত তা নাকচ করেন।এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) তদন্ত চালাচ্ছে।
গত ১৩ মার্চ রাতে বন্ধু কেনিথ ওয়াকারের সঙ্গে ছিলেন ব্রিওনা। তখন তাঁরা দরজায় শব্দ শুনতে পান। লুইসভিলের পুলিশ কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায়ীকে ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছিলেন। পুলিশের সন্দেহ ছিল, ওই বাড়িতে মাদক ব্যবসায়ী ব্রিওনার সাবেক বয়ফ্রেন্ড আসতে পারেন। এ কারণে বাড়িতে তল্লাশির অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু ব্রিওনার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না।
ব্রিওনার বন্ধু ওয়াকারের কাছে থাকা বন্দুকের অনুমোদন ছিল। ১৩ মার্চ রাতে দরজায় শব্দ শুনে তিনি ভেবেছিলেন, ব্রিওনার সাবেক বয়ফ্রেন্ড ঝামেলা করতে এসেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, ওয়াকারের গুলি একজন পুলিশ কর্মকর্তার পায়ে লাগে। এ সময় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা ৩২টি গুলি চালান। ওই ঘটনার সময় বিছানা থেকে উঠে আসেন ব্রিওনা। তাঁকে গুলি করা হলে তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন।
গত মে মাসে ওয়াকারের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগ আনা হয়। তবে পরে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হ্যানকিসনকে লুইসভিল মেট্রো পুলিশ বিভাগ থেকে গত জুন মাসে বরখাস্ত করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, তিনি অভিযানের সময় কারণ ছাড়াই ১০টি গুলি ছুড়েছিলেন। অন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক দায়িত্বে পুনরায় নিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ছয়জন পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।