ট্রাম্পের চেয়ে আরও এগিয়ে বাইডেন

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এনবিসি নিউজ ও ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের সর্বশেষ জরিপ বলছে, ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের এই প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে বাইডেন এখন জাতীয়ভাবে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে। গতকাল রোববার এই জরিপের ফল প্রকাশিত হয় বলে ইউএসএ টুডের এক খবরে জানানো হয়েছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক দলের বাইডেন। অত্যন্ত বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ওই বিতর্কের মাত্র দুই দিনের মাথায় এই জরিপ চালানো হয়। আর ২ অক্টোবর যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর বেরোয়, তার আগেই এই জরিপ শেষ হয়েছে। ট্রাম্প বর্তমানে ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ওয়াল্টার রিড মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে দেখা যাচ্ছে, জো বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছেন নিবন্ধিত ৫৩ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষে এমন ভোটার ৩৯ শতাংশ। এনবিসি নিউজ/ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের আগের জরিপটি চালানো হয়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর। তখন ট্রাম্পের চেয়ে ৬ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। এবার সেই পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ১৩। অতীতে কখনো বাইডেন এত বেশি পয়েন্ট পাননি। তাঁর সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়ার রেকর্ড ছিল গত জুলাইয়ে। তখন ১১ পয়েন্টে এগিয়েছিলেন।
নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি কমেছে প্রবীণ নাগরিক ও শহরতলির নারীদের মধ্যে। প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে ৬২ শতাংশ এখন বাইডেনের সমর্থক; ট্রাম্পকে সমর্থন করেন ৩৫ শতাংশ। শহরতলির নারীদের ক্ষেত্রে এই সমর্থন যথাক্রমে ৫৮ ও ৩৩ শতাংশ।

৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে দেখা যাচ্ছে, জো বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছেন নিবন্ধিত ৫৩ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষে এমন ভোটার ৩৯ শতাংশ।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ বলেছেন, ২৯ সেপ্টেম্বরের বিতর্কে তুলনামূলক ভালো করেছেন । অন্যদিকে ২৪ শতাংশ বলেছেন, বাইডেন নয় ট্রাম্পই ভালো করেছেন। আর ১৭ শতাংশ বলেছেন, দুই প্রার্থীর কেউই কারও চেয়ে ভালো করেননি। অবশ্য, সার্বিকভাবে ৭৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, ওই বিতর্কে দুই প্রার্থী যেমনই করুক না কেন, তা তাঁদের ভোটের সিদ্ধান্তের ওপরে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না।
বিতর্কে জো বাইডেন ভালো করেছেন বলে যারা মত দিয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই ভাষ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুবই খারাপ করেছেন। তাঁর কথাবার্তা ছিল অত্যন্ত অপ্রীতিকর। একজন উত্তরদাতা এনবিসি নিউজকে বলেন, আসলে গত সাড়ে তিন বছর যা যা ঘটেছে, তার একটা খণ্ডচিত্র ছিল ওই বিতর্কটা। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে কিছুই বলার সুযোগ হয়নি। ট্রাম্প ছিলেন অত্যন্ত নেতিবাচক; কথাবার্তা প্রেসিডেন্ট সুলভ ছিল না। আরেক উত্তরদাতা বলেন, ‘আমার অনুভূতিটা ছিল, সেই পুরোনো ট্রাম্পকেই আবার দেখলাম।’ যারা ট্রাম্প অধিকতর ভালো করেছেন বলে মত দিয়েছেন, তাঁদের একজন বলেন, আসলে ট্রাম্পের বক্তব্যের বিপরীতে কোনো সুসংহত জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বাইডেন।

বিতর্কে জো বাইডেন ভালো করেছেন বলে যারা মত দিয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই ভাষ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুবই খারাপ করেছেন। তাঁর কথাবার্তা ছিল অত্যন্ত অপ্রীতিকর।

সর্বশেষ এই জরিপে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দায়িত্ব পালনের ওপরে ভোটারদের আস্থা-অনাস্থার বিষয়টিও উঠে এসেছে। ৪৩ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্টর দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করছেন। এর আগের এনবিসি নিউজ/ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের জরিপের চেয়ে এটা দুই পয়েন্ট কম। ৫৫ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্টর দায়িত্ব ঠিকঠাক পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে বাইডেনের প্রতি আস্থা ও অনাস্থা যথাক্রমে ৪৩ ও ৪১ শতাংশ। আগের জরিপের চেয়ে এটা কিছুটা উন্নতি।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে অ্যামি কোনি বারেটকে সম্প্রতি মনোনীত করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওই ঘটনার পর এনবিসি নিউজ/ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এটাই প্রথম জরিপ। উত্তরদাতাদের ৩৫ শতাংশ বারেটের মনোনয়নকে সমর্থন করেছেন। বিরোধিতা করেছেন ৩৩ শতাংশ। ৩০ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে মত দেওয়ার জন্য যথেষ্ট তথ্য তাঁদের কাছে নেই। এ ছাড়া ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা সুপ্রিম কোটের এই আসন পূরণের জন্য নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পক্ষে। অন্যদিকে ৩৮ শতাংশ বলেছেন, অপেক্ষা না করে এখনই বিষয়টা চূড়ান্ত করা দরকার।