অনিচ্ছা সত্ত্বেও কুচকাওয়াজে যাওয়াটাই কাল হলো তাঁর
যুক্তরাষ্ট্রের হাইল্যান্ড পার্কে আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না ৭৬ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা নিকোলাস টোলেডোর।
কিন্তু নিকোলাসের পরিবারের অন্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে যাবেন বলে মনস্থির করেন।
এমন অবস্থায় নিকোলাসের এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে না গিয়ে উপায় ছিল না। কারণ, তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। এই প্রতিবন্ধকতার জন্য সারা দিনই তাঁর পাশে কাউকে না কাউকে থাকতে হতো।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও কুচকাওয়াজে যাওয়াটাই কাল হলো নিকোলাসের। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবারের এই কুচকাওয়াজে বন্দুকধারীর হামলায় যে ছয়জন নিহত হন, তাঁদের একজন নিকোলাস। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের উপশহর হাইল্যান্ড পার্কের এ অনুষ্ঠানে হুইলচেয়ারে বসে ছিলেন নিকোলাস। তাঁর দুই পাশে ছিলেন ছেলে ও ভাতিজা। সে সময় হঠাৎ গুলি শুরু হয়।
ঘটনা সম্পর্কে নিকোলাসের নাতনি সোচিল টোলেডো বলেন, গুলি শুরু হলে তাঁরা সবাই হতবাক হয়ে যান। তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন, এটা কুচকাওয়াজেরই অংশ।
সোচিল বলেন, একপর্যায়ে বুঝতে পারেন, তাঁর দাদার গায়ে গুলি লেগেছে। তাঁরা রক্ত দেখতে পান।
নিকোলাসের গায়ে তিনটি গুলি লাগে। এতে তিনি নিহত হন। তাঁর ছেলের পাশাপাশি সোচিলের প্রেমিকও গুলিবিদ্ধ হন। তবে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
পরিবারের ভাষ্যমতে, নিকোলাস যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। তিনি কখনো যুক্তরাষ্ট্র, আবার কখনো মেক্সিকোতে থাকতেন।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা শাখার তথ্য অনুযায়ী, গতকালের এই কুচকাওয়াজে নিহত ছয়জনের মধ্যে একজন মেক্সিকান নাগরিক। তবে এই ব্যক্তি নিকোলাস কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে মাসকয়েক আগে মেক্সিকো থেকে হাইল্যান্ড পার্কে ফিরে আসেন নিকোলাস।
কয়েক বছর আগে হাইল্যান্ড পার্ক এলাকায় হাঁটার সময় নিকোলাস গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিলেন। এ দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
নাতনি সোচিল বলেন, ‘তিনি (নিকোলাস) যাতে ভালো থাকেন, সে জন্যই আমরা তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছিলাম। ছেলেরা তাঁর সেবাযত্ন করতে চেয়েছিলেন, যেন তাঁকে বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখা যায়। তারপরই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল।’