ইউক্রেন যুদ্ধে প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। এ সংখ্যা রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধপূর্ব বাহিনীর প্রায় ৯০ শতাংশ।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মূল্যায়নটি মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া হয়েছে। মূল্যায়নটির বরাত দিয়ে সূত্র আরও জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে ৩ হাজার ৫০০ ট্যাংক ছিল। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার ২০০ ট্যাংক তারা ইউক্রেন যুদ্ধে হারিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। তিনি সংশয়ে থাকা মার্কিন কংগ্রেসকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে কিয়েভের অর্থসহায়তা দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অব্যাহতভাবে অর্থসহায়তা পেলে কিয়েভ এই যুদ্ধ জয়ী হতে পারে।
এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নের তথ্য সামনে এল।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকের আগে গতকাল মঙ্গলবার কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আগের মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নটি হয়েছিল ২০২২ সালের জুলাইয়ে। সবশেষ মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেল।
আগের মূল্যায়নের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক বিল বার্নস বলেছিলেন, মার্কিন গোয়েন্দাদের হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ১ হাজার ৫০০ সেনার কাছাকাছি নিহত হয়েছেন। আহত রুশ সেনার সংখ্যা তিন গুণ হতে পারে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশ চলমান যুদ্ধে নিজ নিজ পক্ষের হতাহতের তথ্য অনেকটাই চেপে রাখছে।
ইউক্রেন যুদ্ধপূর্ব রুশ সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার। মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়ন অনুযায়ী, এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ৩ লাখ ১৫ হাজার সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। অর্থাৎ যুদ্ধপূর্ব রুশ বাহিনীর ৮৭ শতাংশ সদস্যই হতাহত হয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়নের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার স্থলবাহিনী আধুনিকীকরণের জন্য মস্কোর ১৫ বছরের প্রচেষ্টাকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ।
যুদ্ধে হওয়া ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য রাশিয়া ‘অস্বাভাবিক ব্যবস্থা’ নিচ্ছে। যেমন বন্দীদের মুক্তি দেওয়া, তাঁদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন জোর দিয়ে বলেছেন, অভিবাসন বিষয়ে তাঁদের দাবির পূরণ চান তাঁরা। ডেমোক্র্যাটরা এ দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত কিয়েভের জন্য বাইডেন যে নতুন করে ৬০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে কংগ্রেসকে অনুরোধ জানিয়েছেন, তা তাঁর (রিপাবলিকান) দল অনুমোদন করবে না।