মোজার তৈরি বানরের জাদুঘর
এ যেন এক বানরময় জাদুঘর। পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কয়েকটি বানর। কয়েকটি রাখা হয়েছে পিপের (কাঠের ড্রাম) মধ্যে। কিছু আবার সারি বেঁধে রাখা তাকের ওপর। এমন নানা ভঙ্গিমায় ২ হাজার ৯৮টি বানর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের এক জাদুঘরে। মজার বিষয়, বানরগুলো সব পুতুল। মোজা দিয়ে তৈরি। পুতুলগুলো ‘সক মাংকি’ নামে পরিচিত।
জাদুঘরটির নাম রাখা হয়েছে ‘সক মাংকি মিউজিয়াম’। পুতুল বানরের বিপুল সমাহারের কারণে গত বৃহস্পতিবার জাদুঘরটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খাতায় নাম লিখিয়েছে। এই অর্জনে বেশ খুশি জাদুঘরের মালিক মাইকেল ওকুন ও আর্লিন ওকুন।
২০০৬ সাল থেকে বানরের পুতুল জমানো শুরু করেছিলেন তাঁরা। আর্লিনের জবানিতে, ‘আমরা গাড়িতে করে দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। পথে আমরা একটি রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকানে থামলাম। সেখান থেকেই প্রথম বানরের পুতুলটি কিনেছিলাম।’
এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাকি পুতুলগুলো সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। একসময় এই পুতুল বানরকেই নিজেদের দেশ ভ্রমণের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতেন মাইকেল ও আর্লিন। পরে নিজেদের আগ্রহ থেকে এই পুতুলের ইতিহাস ঘাঁটতে শুরু করেন। উঠে আসে বিশাল এক গল্প।
সক মাংকি জাদুঘরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫৭ সালে সুইডেন থেকে ইলিনয়ের রকফোর্ড শহরে গিয়ে বসবাস শুরু করেন জন নেলসন নামের এক ব্যক্তি। ১৮৮২ সালে তিনি সেখানে একটি কারখানা গড়ে তোলেন। সেখানে মোজাও তৈরি করা হতো। ওই মোজার বিশেষত্ব ছিল, সেগুলো গোড়ালির অংশ ছিল লাল রঙের সুতা দিয়ে বোনা।
পরে গত শতকে অর্থনৈতিক মহামন্দার কবলে পড়ে বিশ্ব। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিবারে শিশুদের জন্য গোড়ালিতে লাল রঙের কাজ থাকা মোজা দিয়ে বানরের পুতুল বানিয়ে দেওয়ার চল শুরু হয়। পুতুলের মুখ বানানো হতো মোজার ওই লাল অংশ দিয়ে। সে সময় থেকেই জনপ্রিয় হয় সক মাংকি।