যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বেড়েছে ৭০%

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে এক শিক্ষার্থী। লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, ২৫ এপ্রিলফাইল ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে মুসলিমবিদ্বেষ। একই সঙ্গে বেড়েছে মুসলমানদের ওপর হামলা ও বৈষম্যের ঘটনা। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এ ধরনের ঘটনা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন মুসলমানদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকা সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে নিহত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৪০০ জন। এরই মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইসলামবিদ্বেষ ও ফিলিস্তিনবিদ্বেষ বেড়েছে বিশ্বজুড়েই। একই সঙ্গে বাড়ছে ইহুদিবিদ্বেষও।

আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে সিএআইআর বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে তাদের কাছে মুসলিম ও ফিলিস্তিনবিরোধী ঘটনাসংক্রান্ত ৪ হাজার ৯৫১টি অভিযোগ এসেছে। এটি ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি। সে বছরে মোট অভিযোগ এসেছিল ৮ হাজার ৬১টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬০০টিই গাজা যুদ্ধ শুরুর পর বছরের শেষ তিন মাসে এসেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ৯ মাসে মুসলমানদের ওপর হামলার বেশ কিছু উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। যেমন গত বছরের অক্টোবরে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত ছয় বছরের এক মার্কিন শিশুকে ছুরিকাঘাত, নভেম্বরে ভারমন্টে ফিলিস্তিনি তিন ছাত্রকে গুলি, গত ফেব্রুয়ারিতে টেক্সাসে ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত এবং মে মাসে ভারমন্টে ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত তিন বছরের এক শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যাচেষ্টার মতো ঘটনা।

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রে বড় বড় বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে। সিএআইআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় মার্কিন পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। দেশটিতে ফিলিস্তিনবিরোধী বিক্ষোভও হয়েছে।

মুসলমানদের ওপর হামলা ও বৈষম্যের এ অভিযোগগুলো সংগ্রহ করতে সরকারি বিবৃতি ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া ভিডিওর সহায়তা নিয়েছে সিএআইআর। মানুষের সঙ্গে কথা বলে, ই–মেইলে, এমনকি ইন্টারনেটে অভিযোগ করার ব্যবস্থার মাধ্যমেও তা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া গণমাধ্যমে যেসব ভুক্তভোগীর তথ্য পাওয়া গেছে, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে সিএআইআর।