বরখাস্ত করা ২৫ হাজার কর্মীকে আদালতের নির্দেশে চাকরিতে ফেরাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন
সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া ফেডারেল সরকারের প্রায় ২৫ হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করার কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই সঙ্গে কর্মীদের চাকরিচ্যুত করাটা অবৈধ হয়ে থাকতে পারে, একজন বিচারকের এ আদেশের পর ফেডারেল সংস্থাগুলো তাঁদের সবাইকে চাকরিতে ফেরত আনার কাজ করছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের দাখিল করা নথিপত্রে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোর ফেডারেল আদালতে গত সোমবার দাখিল করা হয় এসব নথিপত্র। নথিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ১৮টি সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিবৃতিও রয়েছে। তাঁরা সবাই বলেছেন যে চাকরিতে পুনর্বহাল করা শিক্ষানবিশ কর্মীদের সবাইকে অন্তত সাময়িক সময়ের জন্য হলেও প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।
ফেডারেল সরকারের আকার কমাতে (খরচ ও জনশক্তি) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্ক সম্প্রতি যে বড় কর্মসূচি হাতে নেন, তার অংশ হিসেবে ওই ২৫ হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হলে মামলা করা হয় বিভিন্ন স্থানে।
ফেডারেল সরকারের আকার কমাতে (খরচ ও জনশক্তি) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্ক সম্প্রতি যে বড় কর্মসূচি হাতে নেন, তার অংশ হিসেবে ওই ২৫ হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হলে মামলা করা হয় বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এই প্রথম প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মীদের বরখাস্ত করা নিয়ে স্বীকারোক্তি ও তাঁদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করে আদালতে নথি দাখিল করা হলো।
অধিকাংশ সংস্থার কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা কয়েক শ করে কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছেন। এর মধ্যে অর্থ বিভাগের প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন, কৃষি বিভাগের প্রায় ৫ হাজার ৭০০ এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের ৩ হাজার ২ শতাধিক রয়েছেন।
এ ঘটনায় মামলা হলে বাল্টিমোর ফেডারেল আদালতের ডিস্ট্রিক্ট জজ জেমস ব্রেডার ১৩ মার্চ এক আদেশ দেন। আদেশে তিনি বলেন, গত মাসে শিক্ষানবিশ কর্মীদের গণহারে চাকরিচ্যুতি শুরু করার যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা অবৈধ। পাশাপাশি, এ নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার আদেশ দেন তিনি।
ফেডারেল সংস্থাগুলো রায়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্থবহ অগ্রগতি করেছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে।
সংস্থাগুলোকে তাদের কর্মীদের বরখাস্ত করার পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার বিষয়টি এ আদেশে আটকে দেওয়া হয়নি। তবে যেভাবে গণহারে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে, সেটিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আদালত আরও বলেছেন, ব্যাপকভাবে কর্মীদের চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর উচিত নিয়মকানুন মেনে চলা।
শিক্ষানবিশ কর্মীদের তাঁদের বর্তমান ভূমিকায় সাধারণত এক বছরের কম সময় দায়িত্ব পালন করে যেতে হয়। তবে যাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাঁদের কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে ফেডারেল কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংক্ষিপ্ত আদেশে বিচারক জেমস ব্রেডার বলেন, সংস্থাগুলো তাঁর দেওয়া রায়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্থবহ অগ্রগতি করেছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে। তিনি সংস্থাগুলোকে আগামী সোমবার বিকেলের মধ্যে কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের অগ্রগতি সম্পর্কে তাঁকে হালনাগাদ তথ্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি তাঁর আদেশে ‘যথেষ্ট সাড়া’ আশা করছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিয়েছিল যে শিক্ষানবিশ কর্মীদের প্রত্যেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাঁদের কর্মদক্ষতা বা অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণে। তবে ১৩ মার্চ ব্রেডার তাঁর এক আদেশে বলেছিলেন, প্রশাসনের এ বক্তব্য সত্য নয় এবং বরখাস্ত করা শিক্ষানবিশ কর্মীদের সহায়তা করতে তাঁদের দায়দায়িত্ব রয়েছে।
ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত ১৯টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সম্প্রতি শিক্ষানবিশ কর্মীদের গণহারে ছাঁটাই করা নিয়ে মামলা করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বিচারক ওই আদেশ দিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশ মেনে কর্মী ছাঁটাই ও খরচ কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া সব ফেডারেল সংস্থার জন্যই তাঁর আদেশ প্রযোজ্য হবে।
ব্রেডারের আদেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন ভার্জিনিয়াভিত্তিক আপিল আদালতে আপিল করেছে।
বিচারকের এ আদেশের আগে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিয়ে বলেছিল যে শিক্ষানবিশ কর্মীদের প্রত্যেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাঁদের কর্মদক্ষতা বা অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণে। তবে ১৩ মার্চ ব্রেডার তাঁর আদেশে বলেছিলেন, প্রশাসনের এ বক্তব্য সত্য নয় এবং বরখাস্ত করা শিক্ষানবিশ কর্মীদের সহায়তা করতে তাদের দায়দায়িত্ব রয়েছে।
১৩ মার্চ ব্রেডারের এ আদেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে এক শুনানিতে আরেক বিচারক উইলিয়াম অ্যালসুপ ছয়টি সংস্থার বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দেন।