সম্পর্ক উষ্ণ ও গভীর করতে প্রত্যয়ী ট্রাম্প-স্টারমার
জুলাই মাসে নির্বাচিত ব্রিটেনের নতুন লেবার সরকার ট্রাম্পের দলের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরির জন্য কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক বেশ উষ্ণ। সেই উষ্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর ও উষ্ণতর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। গত রোববার দুই নেতার মধ্যে এক ফোনালাপে দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করার বিষয়টি উঠে এসেছে। একই সঙ্গে ট্রাম্প ও স্টারমার শিগগিরই বৈঠক করার বিষয়েও সম্মত হয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জুলাই মাসে নির্বাচিত ব্রিটেনের নতুন লেবার সরকার ট্রাম্পের দলের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরির জন্য কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করে আসছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি একসময় ট্রাম্পকে ‘টুপি পরা অত্যাচারী’ বলেছিলেন। এ সপ্তাহে সুর বদলে ট্রাম্পের অবিশ্বাস্য অনুগ্রহের প্রশংসা করেছেন তিনি। গত শনিবার ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টারমারের প্রশংসা করা হয়। ট্রাম্প স্টারমারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তিনি খুব ভালো কাজ করছেন।’ অবশ্য এর আগে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্কের সমালোচনার মুখে পড়েন স্টারমার।
ট্রাম্পের সঙ্গে স্টারমারের এ উষ্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামরিক বাজেট বাড়ানোর বিষয় যুক্ত থাকতে পারে। তবে দুই নেতার ফোনালাপে বিষয়টি আলোচনা হয়নি। এর আগে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, ‘পশ্চিমা সামরিক জোটের সদস্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর সামরিক ব্যয় বাড়ানো উচিত।’
অবশ্য যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকেও আগ্রহী হওয়ার কারণ রয়েছে। মরিশাসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের চাগোস দ্বীপ নিয়ে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন পেতে চাইছে লন্ডন।
স্টারমারের ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয় বলেছে, ‘দুই নেতা ফোনালাপে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও উষ্ণ সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা বলেন। দুই নেতা পরবর্তী সাক্ষাতে বিস্তারিত আলোচনার কথা জানান।’
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের দীর্ঘদিনের ভক্ত ট্রাম্প। তিনি রাজপরিবারের প্রতি শুভকামনা জানান।
স্টারমারের পক্ষ থেকে তাঁর দেশ ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরতে চান। স্থবির হয়ে পড়া যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের জন্য ‘বিনিয়োগের নতুন উৎস’ খুঁজছেন স্টারমার।
গত রোববার নিজের উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে ট্রাম্প বলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক সফরের গন্তব্য হতে পারে সৌদি আরব বা যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমগুলোর ধারণা অনুযায়ী, ট্রাম্পের লন্ডন সফর আসন্ন। এর আগে ২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। ট্রাম্প তাঁকে ‘মহান নারী’ ও ‘যিনি কখনো ভুল করেন না’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির বিষয়টিও উঠে এসেছে। স্টারমারের পক্ষ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তায় দুই দেশ একত্রে কাজ করার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন স্টারমার। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলের যৌথ নাগরিক এমিলি দামারির হামাসের হাত থেকে মুক্তির বিষয়ে প্রশংসা করা হয়।