সিরিয়ার নেতা শারাকে গ্রেপ্তারে ১ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল শারাকে গ্রেপ্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ১ কোটি ডলার পুরস্কার প্রদানের ঘোষণাটি প্রত্যাহার করেছে ওয়াশিংটন। গতকাল শুক্রবার সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কূটনীতিক এ ঘোষণা দিয়েছেন।
নিয়ার ইস্টার্ন অ্যাফেয়ার্স সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বারবারা লিফ শুক্রবার অন্য মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক সফর করেন। সেখানে সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করেন। এরপরই লিফ পুরস্কারের ঘোষণাটি প্রত্যাহারের কথা জানান।
সিরিয়ায় বাশার আল–আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হওয়ার পর দেশটিতে মার্কিন কূটনীতিকদের প্রথম সফর এটি। চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে আসাদ সরকারের পতন হয়।
২০১৮ সালে এইচটিএসকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আল শারা এই সংগঠনটির নেতা। তিনি আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি নামেও পরিচিত। এক সময় আল কায়েদার সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন এ নেতা।
লিফ বলেন, শুক্রবারের আলোচনায় ‘ইতিবাচক বার্তা’ পাওয়ার পর আল শারাকে গ্রেপ্তারের জন্য ঘোষিত পুরস্কার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীগুলো যেন হুমকি তৈরি করতে না পারে তা নিশ্চিত করার বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের লিফ বলেন, ‘আমাদের আলোচনার ভিত্তিতে আমি তাঁকে বলেছি যে কয়েক বছর ধরে কার্যকর থাকা রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস নামের পুরস্কারের ঘোষণাটি আর আমরা বলবৎ রাখব না। ক্ষমতার পালাবদলের এই সময়ে অন্তর্ভুক্তি এবং বিস্তৃত পরামর্শের গুরুত্ব সম্পর্কেও বলেছি।’
সিরিয়ায় লিফের সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন সিরিয়ায় নিযুক্ত সাবেক বিশেষ দূত ড্যানিয়েল রুবিনস্টেইন, জিম্মিবিষয়ক ঘটনা সামলানোর দায়িত্বে থাকা মার্কিন সরকারের বিশেষ দূত রজার কারস্টেনস। মার্কিন প্রতিনিধিরা এমন সময়ে সিরিয়া সফর করছেন, যখন পশ্চিমা দেশগুলো এইচটিএসের ওপর থেকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে ফেলা হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে।
লিফ বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার নেতৃত্বাধীন এবং সিরিয়ার আয়ত্ত্বাধীন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি, যার ফলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গড়ে ওঠে, যা নারীসহ সব সিরীয় নাগরিক এবং সিরিয়ার বিভিন্ন জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকারকে সম্মান করে।’
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে শারার বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষও বলেছে, তারা আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে চায়।
এর আগে সিরিয়ার এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, আল শারা ও মার্কিন প্রতিনিধিদের বৈঠকটি ইতিবাচক ছিল।