আরেক মামলায় অভিযুক্ত ট্রাম্প, সমন জারি
হোয়াইট হাউস ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রের ‘সরকারি গোপন নথি’ নিজের কাছে রেখে দেওয়ার অভিযোগে করা এক মামলায় অভিযুক্ত হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো আজ শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে। খবর অনুযায়ী, বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি গোপন নথি নিজের কবজায় রাখাসহ সাতটি অভিযোগের মুখে রয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্প। তবে এসব অভিযোগের বিষয়টি দেশটির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো প্রকাশ করেনি।
রাষ্ট্রীয় গোপন নথিসংক্রান্ত এ মামলাসহ দ্বিতীয় কোনো মামলায় অভিযুক্ত হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদালতে যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাঁর ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
২০২৪ সালে হবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি প্রচারণা শুরু করেছেন।
আইনবিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মামলায় অভিযুক্ত হলেও ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে বাধা নেই।
‘যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এমনটা (মামলায় অভিযুক্ত) করা যে সম্ভব, আমি কখনো তা ভাবিনি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি কালো দিন। আমাদের এ দেশের দ্রুত পতন হচ্ছে। এ পতন বেশ গুরুতর। কিন্তু আমরা সবাই মিলে আবারও আমেরিকাকে মহান করে তুলব।’ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট
রাষ্ট্রীয় গোপন নথিসংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি ট্রাম্প নিজেও নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ তথ্য নিশ্চিত করে ট্রাম্প লিখেছেন, তাঁকে অভিযুক্ত করে মায়ামির একটি ফেডারেল আদালতে হাজির হতে তাঁর নামে সমনও জারি করা হয়েছে। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এমনটা (মামলায় অভিযুক্ত) করা যে সম্ভব, আমি কখনো তা ভাবিনি।’ একে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘কালো দিন’ বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক দেশ, যার দ্রুত পতন হচ্ছে। আর এ পতন বেশ গুরুতর। কিন্তু আমরা সবাই মিলে আবারও আমেরিকাকে মহান করে তুলব।’
ট্রাম্পের আইনজীবী জিম ট্রাস্টি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে (ডোনাল্ড ট্রাম্প) একটি সমন পাঠানো হয়েছে। সেখানে অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ আছে।
জিম ট্রাস্টি বলেন, এর মধ্যে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা সাক্ষ্য, আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়াসহ গুপ্তচরবৃত্তি আইনে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের কাছে রাখার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার এ বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এবং এসব অভিযোগের বিষয়ে সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশও করেনি।
এর আগে গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে সেখান থেকে ১১ হাজার রাষ্ট্রীয় নথি জব্দ করে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ। জব্দ হওয়া এসব নথির প্রায় ১০০টি ছিল ‘গোপনীয়’। এর মধ্যে কিছু ‘অতি গোপনীয়’ নথিও ছিল।
পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার ঘটনায় গত মার্চে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে এ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়।
ওই মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সাবেক পর্নো তারকা ড্যানিয়েলকে তাঁর পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল।