পালিয়ে বাঁচার অভিজ্ঞতা জানালেন প্রকৌশলী ফরিদ ও অভিনেতা রিক

ভয়াবহ দাবানলের কবলে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস। ৭ জানুয়ারি ২০২৫ছবি: রয়টার্স

ফোয়াদ ফরিদ একজন ডেটা বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় বসবাস করেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসের সমুদ্রসৈকত শহর মালিবুতে কাজ থাকায় গত মঙ্গলবার সকালে ফরিদ তাঁর প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকার বাসা থেকে বের হন।

ঠিক এ সময় ফরিদের মুঠোফোনে লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলের বিষয়ে একের পর এক সতর্কবার্তা আসতে থাকে।

সতর্কতা বার্তাগুলোয় বলা হয়, দাবানল ফরিদের প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বসত এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এ অবস্থায় ফরিদের আর বাসায় ফেরার উপায় ছিল না। কারণ, ইতিমধ্যে প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আর আগুয়ান দাবানল থেকে বাঁচতে গাড়িচালকেরা তাঁদের যানবাহন প্যালিসেডস ড্রাইভে ফেলে চলে গিয়েছিলেন।

ফরিদ বলেন, ‘আমার সঙ্গে আমার গাড়ি ও ফোন ছাড়া আর কিছুই নেই। এমনকি আমার সঙ্গে আমার ওষুধও নেই।’

দাবানলের কারণে বাড়িছাড়া হয়ে ফরিদ লস অ্যাঞ্জেলেসের ওয়েস্টউড রিক্রিয়েশন সেন্টারের ব্যায়ামাগারে (জিম) আশ্রয় নেন।

দাবানল থেকে বাঁচতে যাঁদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, তাঁদের জন্য এই ব্যায়ামাগার অস্থায়ী আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এখানে আশ্রয় নেওয়া দুর্গত লোকজনকে সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা দুর্গত লোকদের কম্বল, পোশাক, পানি ও খাবার দিচ্ছেন।

দাবানল দুর্গতদের সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন জেফ হ্যারিস। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে এসে কাজ করছেন। তিনি দুর্গতদের মধ্যে খাবার বিতরণ করছেন।

জেফ হ্যারিস বলেন, ‘আমি এখানে শুধু সাহায্য করতেই এসেছি।’

ফরিদ প্যাসিফিক প্যালিসেডসের একমাত্র বাসিন্দা নন, যাঁকে এক কাপড়ে চলে আসতে হয়েছে।

ফরিদের মতো আরেক দুর্গত ব্রায়ান। শুরু তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু যখন তিনি দেখেন, লোকজন লাগেজ নিয়ে পালাচ্ছেন, দাবানল ধেঁয়ে আসছে, তখন আর তাঁর বসে থাকার উপায় ছিল না। এ অবস্থায় তিনি তাঁর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন।

আরও পড়ুন

ব্রায়ান বলেন, বাসার কাছাকাছি এলাকায় তিনি দাবানলের আগুন দেখতে পান। পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে আগুনের লেলিহান ওপরের দিকে উঠছিল।

বাসা ছাড়ার পর একটি আশ্রয়স্থল খোঁজার আগে ব্রায়ান তাঁর গাড়িতে ঘুমিয়ে রাত কাটান।

রিক সিকেত্তি একজন অভিনেতা। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন মিলিয়ে এক ডজনের বেশি কাজ আছে তাঁর। দাবানল এগিয়ে আসার মুখে তিনি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও প্রিয় বিড়াল নিয়ে সান্তা মনিকা এলাকার বাড়ি ছাড়েন।

আরও পড়ুন

রিক বলেন, তিনি ৪২ বছর ধরে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করে আসছেন। এর আগে কখনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে বাসা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা নিয়ে তাঁর দরজায় কড়া নাড়েননি।

রিক আরও বলেন, খবরে দাবানলের আগুন দেখা কিংবা বাসার অবস্থান থেকে পাঁচ মাইল দূরে আগুন দেখার সঙ্গে এই কথা শোনার অনেক পার্থক্য আছে যে দাবানলের পরবর্তী ভুক্তভোগী ব্যক্তি হতে যাচ্ছেন ‘আপনি’।

আরও পড়ুন