তরুণ ভোটারদের কাছে টানছেন ট্রাম্প
টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি হতে যাচ্ছে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে জয় নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে লড়ছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তরুণ ভোটারদের, বিশেষ করে যাঁরা প্রথমবার ভোট দেবেন, তাঁদের সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্য। এর একটি জর্জিয়া। সেখানকার তিনজন নতুন ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছে এএফপি। এঁদের একজন ক্যামরন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন ১৮তম জন্মদিনের কেক কাটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ক্যামরন। আটলান্টায় জর্জিয়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সোমবার ট্রাম্পের একটি নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নেন তিনি। এ সময় হাইস্কুলপড়ুয়া এই ভোটারের মাথায় ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিসংবলিত লাল রঙের একটি টুপি। তা দেখে সহজেই আন্দাজ করা যায় তিনি কাকে ভোট দেবেন।
ক্যামরন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এখন যা হচ্ছে, তা অনেক তরুণই পছন্দ করে না।’ তাঁর ধারণা, ডেমোক্র্যাটরা এলজিবিটিকিউ এজেন্ডা এবং ট্রান্সজেন্ডার এজেন্ডার পেছনে খুব বেশি সময় ব্যয় করছেন। অথচ মানুষের নিত্যদিনের সমস্যা সমাধানে পর্যাপ্ত সময় দিচ্ছেন না তাঁরা।
এই হাইস্কুলপড়ুয়া আরও বলেন, ‘তরুণসমাজ এখন আর এসব চান না। তাঁরা একজন শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর নেতা চান, যাঁর মেরুদণ্ড আছে। তাঁরা শ্রদ্ধা ও সম্মান করার মতো একজনকে চান।’
ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন ১৮ বছর বয়সী সিজার ভিয়েরাও। এই তরুণ বলেছেন, আগাম ভোট দেওয়ার ব্যবস্থাপত্রের সুবিধা নিয়ে তিনি যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পকে ভোট দিতে প্রস্তুত। একাধিক অঙ্গরাজ্যে এ ব্যবস্থা চালু আছে।
সিজারের কাঁধে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পতাকা ঝুলছিল। তিনি বলছিলেন, ‘তরুণ আমেরিকানদের জন্য ট্রাম্প অপেক্ষাকৃতভাবে অনেক ভালো। এই মুহূর্তে আমাদের অর্থনীতির জন্য তিনিই সেরা।’
এই ভোটার ঘরবাড়ি সংস্কারের কাজ করেন। কিন্তু কখনো নিজের একটি বাড়ি বানানোর সামর্থ্য হবে কি না, তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
নির্বাচিত হলে ৭৮ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে সবচেয়ে প্রবীণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন তিনি। তবে ট্রাম্পের বয়স নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় সিজার।
সিজার বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এটা (বয়স) কোনো ব্যাপার নয়, তিনি মানসিকভাবে কেমন করছেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
১৯ বছর বয়সী কম্পিউটার প্রকৌশলী ট্রেনটন ডাইকস। তিনিও এবার ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রার্থীই নিখুঁত নন।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ থাকলেও তাঁর সমর্থনে অটল ট্রেনটন ডাইকস। ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী সমাবেশে বারবারই অভিবাসীদের পশু এবং অপরাধী বলেছেন।
ট্রেনটন বলেন, ‘আমরা তাঁকে ইতিমধ্যে চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেয়েছি। আমার মনে হয় না, এ সময় তিনি নীতিগত দিক থেকে বর্ণবাদী কোনো আচরণ বা কাজ করেছেন।’
এই শিক্ষার্থী প্রথমে স্বতন্ত্র প্রার্থী রবার্ট কেনেডি জুনিয়রের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। পরে তিনি রবার্ট ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানানোর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
ট্রেনটন বলেন, ‘আমি চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে কাউকে ভোট দিই না।’ ট্রাম্প ভিন্ন মতাদর্শের মানুষকে নিজের দিকে টানছেন বলেও মনে করছেন এই শিক্ষার্থী।