ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরোধিতাও ইহুদিবিদ্বেষ, যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্কিত বিল পাস
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে একটি বিল পাস হয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার থাকা সংগঠনগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও গতকাল বুধবার বিলটি পাস হয়। এটি এখন অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হবে।
গতকাল প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩২০ জন সদস্য। আর বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯১ জন। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ চলছে, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিলটি পাস করা হয়েছে।
সিনেটে পাস হওয়ার পর বিলটি যদি আইনে পরিণত হয়, তবে এর মধ্য দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল হলোকস্ট রিমেমব্র্যান্স অ্যালায়েন্সের (আইএইচআরএ) দেওয়া ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞাকে বিধিবদ্ধ করা হবে। আইএইচআরএর সংজ্ঞাকে আইনে যুক্ত করা হলে ইহুদিবিদ্বেষের চর্চা হওয়ার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বন্ধ করে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ।
সমালোচকেরা বলছেন, আইএইচআরএর ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করা হতে পারে।
আইএইচআরএর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ইহুদিবিদ্বেষ হলো ‘ইহুদিদের নিয়ে একটি নির্দিষ্ট ধারণা, যা ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে ব্যবহার করা হতে পারে।’
আইএইচআরএর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ইসরায়েল রাষ্ট্রকে আক্রমণ করে কিছু বলাকেও ইহুদিবিদ্বেষ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, ইসরায়েলকে ইহুদিদের সম্মিলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)। চিঠিতে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের বিলটির পক্ষে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, বিদ্যমান কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী, ইহুদিবিদ্বেষী বৈষম্য ও হয়রানি এমনিতেই নিষিদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে এমন সময়ে ইহুদিবিদ্বেষ–বিরোধী বিলটি পাস হলো, যখন দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন ইসরায়েলকে বর্জন করে।
ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসন এবং ওয়াশিংটনের অন্য কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে অবিচল সমর্থন জুগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট সদস্যরাও বিক্ষোভ থামাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। তাদের দাবি, এসব বিক্ষোভ ইহুদিবিদ্বেষী।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বিক্ষোভের নেতারা সেই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।