ইউএসএআইডি বন্ধ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কার্যক্রম কার্যকরভাবে বন্ধ করে দিতে গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিক একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, আজ (শুক্রবার) পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) কংগ্রেসকে তাদের পুনর্গঠনের ইচ্ছা সম্পর্কে অবহিত করেছে, যার মধ্যে চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের মধ্যে ইউএসএআইডির কিছু কর্মকাণ্ড পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
রুবিও আরও বলেছেন, ইউএসএআইডির অবশিষ্ট কার্যক্রম, যেগুলো প্রশাসনের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
মার্কো রুবিও আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইউএসএআইডি অনেক আগেই নিজের আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ফলে এ সংস্থার অর্জন খুবই সামান্য এবং ব্যয় অনেক বেশি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পরপর ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক ত্রাণ তহবিল ৯০ দিনের জন্য আটকে দেন।
ওই আদেশের পর ইউএসএআইডির নানা প্রকল্পে নাটকীয়ভাবে কাটছাঁট শুরু হয়, শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তার জন্য সামান্য কিছু ছাড় দেওয়া হয়।
১৯৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি আইন পাসের মাধ্যমে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে ইউএসএআইডির যাত্রা শুরু হয়েছিল।
ট্রাম্প প্রশাসন স্বাধীন সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর তাদের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ডেমোক্র্যাট সিনেটররা।
এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাট সিনেটররা বলেন, পুনর্গঠন করা হলে কেবল ইউএসএআইডির চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করাই অসম্ভব হয়ে পড়বে না; বরং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর যে বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তার কারণে এর মূল লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটবে।
সিনেটররা আরও বলেন, এই প্রস্তাব অবৈধ, বিপজ্জনক ও অপর্যাপ্ত।
ট্রাম্প প্রশাসন বরাদ্দ আটকে দেওয়ার আগে ইউএসএআইডি প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বার্ষিক বাজেটের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশ্বে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের ৪০ শতাংশের বেশি পরিচালিত হয় ইউএসএআইডির মাধ্যমে।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার কয়েক দিন পরই ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল এক স্মারকের মাধ্যমে ইউএসএআইডি কর্মীদের নীতিমালা অনুসারে বাধ্যতামূলক নয়, এমন সব পদ বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ওই স্মারকে ইউএসএআইডির ভারপ্রাপ্ত প্রধান জেরেমি লুইন আরও বলেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর আগামী কয়েক মাসে ইউএসএআইডির বেশির ভাগ স্বাধীন কার্যক্রম বন্ধ করার পরিকল্পনাও করেছে।