নারী নেতৃত্বে বিশ্বে আস্থা কমছে

বড় কোম্পানিগুলোর নেতৃত্বের পর্যায়ে নারীর সংখ্যা বাড়লেও তাঁদের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে।
ফাইল ছবি: এএফপি

সারা বিশ্বে বড় বড় কোম্পানির নেতৃত্ব পর্যায়ে নারীদের সংখ্যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে এ সংখ্যা বাড়লেও গবেষণায় যে চিত্র উঠে এসেছে, তা মোটেই সুখকর নয়। গবেষণা বলছে, কর্মক্ষেত্রে নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে।

গত নভেম্বরে প্রকাশিত ‘দ্য রিকজাভিক ইনডেস্ক ফর লিডারশিপ’ শীর্ষক গবেষণা জরিপে নারী-পুরুষ নেতৃত্বকে কীভাবে দেখা হয়, তার তুলনামূলক একটি চিত্র পাওয়া গেছে। জরিপে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পাবলিক পলিসি বিজনেস-বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কান্টার পাবলিক ২০১৮ সাল থেকে এ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। তখন থেকেই দেখা যায়, নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমতে শুরু করছে।

জি-৭-ভুক্ত কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অর্ধেকেরও কম (৪৭ শতাংশ) উত্তরদাতা বলেছেন, তাঁদের দেশে বড় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী (সিইও) হিসেবে নারী থাকায় তাঁরা বেশ আরামে কাজ করতে পেরেছেন। এর এক বছর আগেও এ হার ছিল ৫৪ শতাংশ। এখন এ দিক থেকে পুরুষেরা এগিয়ে আছেন। প্রতি ১০ জন উত্তরদাতাদের মধ্যে একজন বলেছেন, কোম্পানির নারী সিইও থাকলে তাঁরা কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন না।

নারী রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। সারা বিশ্বে নারী রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে জনগণ। ২০২১ সালে জি-৭-ভুক্ত দেশের ৪৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাঁদের দেশে সরকারপ্রধান নারী থাকায় তাঁরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। কিন্তু এর আগের বছর এ হার ছিল ৫২ শতাংশ।

করোনা মহামারির কারণে অনেক নারী কর্মক্ষেত্র ছেড়ে সন্তান লালন-পালন ও ঘরের কাজে ফিরে গেছেন। এ কারণে পুরোনো প্রথা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ায় অনেকে হতাশ হয়েছেন। আবার গবেষণার এমন ফল নিয়ে শিক্ষাবিদ ও নেতৃত্ব নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা নানা তত্ত্ব দিয়েছেন। তাঁরা প্রায় সবাই সতর্ক করে বলেছেন, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরে আস্থার ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে।

প্রথাগত স্থিতাবস্থা

সিইও হিসেবে নারীদের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ার নানা ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দিয়েছেন, বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও করোনা মহামারির কারণে প্রতিষ্ঠানের আচরণে পরিবর্তন এসেছে। আর এ পরিবর্তন লিঙ্গবৈষম্যের ওপর দারুণ প্রভাব ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসাচুসেটসের ব্যবসন কলেজের অর্গানাইজেশনাল বিহেভিয়র বিষয়ের অধ্যাপক ডানা গ্রিনবার্গ বলেন, করোনা মহামারির কারণে অনেক নারী কর্মক্ষেত্র ছেড়ে সন্তান লালন-পালন ও ঘরের কাজে ফিরে গেছেন। এতে পুরোনো প্রথা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হারানোয় প্রভাব ফেলছে। এতে নারীদের প্রতি পক্ষপাত সামাজিকভাবে আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।

আমরা হয়তো একটি অর্থনৈতিক মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এটা খুব ভয়ের একটি সময়। ভয় আমাদের সেই নিরাপদের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে, যা আমাদের ঐতিহ্যগতভাবে শেখানো হয়েছে। আর এমন সময় যখন নেতৃত্বের প্রশ্ন আসে, তখন স্বাভাবিকভাবেই পুরুষের প্রসঙ্গ আসে।
ডানা গ্রিনবার্গ, ম্যাসাচুসেটসের ব্যবসন কলেজের অর্গানাইজেশনাল বিহেভিয়র বিষয়ের অধ্যাপক

ডানা গ্রিনবার্গ বলেন, ‘আমরা হয়তো একটি অর্থনৈতিক মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এটা খুব ভয়ের একটি সময়। ভয় আমাদের সেই নিরাপদের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে, যা আমাদের ঐতিহ্যগতভাবে শেখানো হয়েছে। আর এমন সময় যখন নেতৃত্বের প্রশ্ন আসে, তখন স্বাভাবিকভাবেই পুরুষের প্রসঙ্গ আসে।’

১৪ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে কান্টার পাবলিক সমীক্ষার বৈশ্বিক তথ্য, রিকজাভিক গ্লোবাল ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন ও উইমেন পলিটিক্যাল লিডারস নেটওয়ার্কের যৌথ এক জরিপেও দেখা গেছে, নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।

কিছু দেশের বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ার রাজনৈতিক কারণও থাকতে পারে। কান্টার পাবলিকের গ্লোবাল সিইও মিশেল হ্যারিসন বলেন, ‘যদি আপনি একটি জাতীয় সংলাপে নারীদের নিজস্ব স্বাস্থ্যসেবার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত কি না, এ বিষয়ে আলোচনা করতে যান, তাহলে এর থেকে আর আপনি কী আশা করতে পারেন?’

দ্য রিকজাভিক ইনডেস্ক ফর লিডারশিপের তথ্য বলছে, জাপান, জার্মানিসহ বেশ কিছু দেশে বয়স্কদের তুলনায় তরুণেরা কম প্রগতিশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অর্থ—এই তরুণদের নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখার সম্ভাবনা অনেক কম।

গত জুনে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া প্রায় পাঁচ দশকের পুরোনো একটি আইন বাতিল করে রায় দেওয়ার বিষয়ের উল্লেখ করে মিশেল বলেন, নারীদের প্রজনন অধিকারের মতো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে যখন জনসমক্ষে প্রশ্ন করা হয়, তখন এটাই প্রমাণ হয়, তাঁর নিজের জীবনে যেকোনো কিছু করার অধিকার নেই।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নারীদের আচরণ নিয়ে নানা মন্তব্য করে বিতর্কিত হয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নারীদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করার প্রবণতা বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইনে নারীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের হার গত পাঁচ বছরে বেড়েছে।

ব্রিটিশ লেখক ও গবেষক লরা বেটস তাঁর ২০২০ সালে প্রকাশিত ‘মেন হু হেইট উইমেন’ বইয়ে লিখেছেন, অনলাইনে বিষয়বস্তুর এমন প্রাধান্য নারীর প্রতি সহিংসতামূলক বা নারীর প্রতি সহিংসতাকে উৎসাহিত করে। এসব বিষয় দৈনন্দিন জীবনে যৌন সংস্কৃতির দিকে সরাসরি ইঙ্গিত করে।

২০২১ সালে মার্কিন সেনাদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় শিক্ষাবিদ কাইলিন হান্টার ও এমা জুয়েন দেখেছেন, যুদ্ধের জন্য দৈহিক সামর্থ্য ও নারীদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দায়ী।
যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা হোপ নট হেইটের ২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের তুলনায় তরুণ প্রজন্মের প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি বেশি। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া তরুণদের অর্ধেক বলেছেন, নারীবাদ বিষয়টি এখন ‘অনেক দূরে’ চলে গেছে বলে তাঁরা অনুভব করেন।

তবে দ্য রিকজাভিক ইনডেস্ক ফর লিডারশিপের তথ্য বলছে, জাপান, জার্মানিসহ বেশ কিছু দেশে বয়স্কদের তুলনায় তরুণেরা কম প্রগতিশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অর্থ—এই তরুণদের নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখার সম্ভাবনা অনেক কম।

সংস্কৃতির অংশ

নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ার আরেকটি তত্ত্ব হলো ক্ষমতার কেন্দ্রে অনেক বেশি নারী থাকায় নারীদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব আগের চেয়ে বেড়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের সিইও ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ক্যাটালিস্টের ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার নির্বাহী পরিচালক অ্যালিসন জিমারম্যান বলেন, ঐতিহাসিকভাবে কর্মক্ষেত্র ও সরকার মূলত পুরুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আর এ সংস্কৃতিও পুরুষেরা তৈরি করেছে। সংস্কৃতি বা আদর্শের ব্যতিক্রম যেকোনো কিছুতে মানুষের আস্থা কম।

২০২০ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার প্রতি তিন পুরুষের একজন বিশ্বাস করেন, সমাজে লিঙ্গসমতার কারণে নারীদের যে লাভ হয়েছে, তা মূলত পুরুষের কারণেই হয়েছে।

২০২০ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার প্রতি তিন পুরুষের একজন বিশ্বাস করেন, সমাজে লিঙ্গসমতার কারণে নারীদের যে লাভ হয়েছে, তা মূলত পুরুষের কারণেই হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক সেসিলিয়া হিউনজাং মো পৃথক এক গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছেন। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, অন্যান্য গোষ্ঠী আপনাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, আপনাদের থেকে ভালো কাজ করছে, তাহলে ধরে নেবেন, আপনি অন্যান্য গোষ্ঠীর ওপর অসন্তুষ্ট হতে শুরু করেছেন।’

নারী নেতৃত্ব নিয়ে কাজ করা মার্কিন প্রতিষ্ঠান হাউ উইমেন লিডের সভাপতি ও সিইও জুলি কাস্ত্রো আব্রামস বলেন, সমাজ কীভাবে নারী নেতাদের দেখে, সেটা একটা বিষয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নারীদের ভিলেন হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। নেতৃত্বের পর্যায়ে যখন আরও বেশি নারী আসেন, তখন সেই আচরণ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। কারণ, এত দিন আমরা যা জেনে-শিখে এসেছি, নেতৃত্বে থাকা একজন নারী তা উল্টে দেয়। মানুষ নারীদের ব্যর্থ দেখতে পছন্দ করে।’
জুলি কাস্ত্রো আব্রামস আরও বলেন, ক্ষমতায় থেকে যখন একজন নারী ব্যর্থ হন, তখন কেন নেতৃত্বে নারী থাকা উচিত নয়, এ বিষয় তাঁকে চারপাশ থেকে বোঝানো হয়। মার্কিন নির্বাচনে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হিলারি ক্লিনটন হেরে গেলেন, তখন অনেক গণমাধ্যম প্রশ্ন তুলেছিল, আমেরিকা সত্যিই নারী প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত কি না।

মার্কিন জনহিতৈষী গবেষণা সংস্থা দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালে একটি গবেষণা করে। এতে দেখা গেছে, কোনো নারী সিইওর কোম্পানি সমস্যায় পড়লে সে জন্য ওই নারীকেই দায়ী করা হয়। পুরুষ সিইওর ক্ষেত্রে এমনটা করা হয় না। যত বেশি নারী সফলভাবে নেতৃত্বে থাকবেন, তত বেশি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে সমালোচনা করা হয়।

সম্প্রতি রক্ত পরীক্ষার প্রযুক্তির বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে থেরানোস নামের মার্কিন বায়োটেকনোলজি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ হোমসকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এলিজাবেথ নারী বলেই তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে। কারণ, অন্য টেক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের সিইওরা অন্যায় করেও এমন সাজার মুখোমুখি হননি।

আমরা নারীদের ভিলেন হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। নেতৃত্বের পর্যায়ে যখন আরও বেশি নারী আসেন, তখন সেই আচরণ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। কারণ, এত দিন আমরা যা জেনে-শিখে এসেছি, নেতৃত্বে থাকা একজন নারী তা উল্টে দেয়। মানুষ নারীদের ব্যর্থ দেখতে পছন্দ করে।’
জুলি কাস্ত্রো আব্রামস, হাউ উইমেন লিডের সভাপতি ও সিইও

গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা বা ব্যর্থতা দেখা দেয়, তখন সেখানে নারী সিইও নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি ‘গ্লাস ক্লিফ’ নামে পরিচিত। গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রিটেইল চেইন স্টোর বেড বাথ অ্যান্ড বিয়ন্ডের স্টকের দাম কমে যাওয়ায় সেখানে একজন নারী সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে মানুষ দীর্ঘদিন গৃহহীন সমস্যা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। শেষমেশ সম্প্রতি তাঁরা নারী মেয়র হিসেবে কারেন বাসকে নির্বাচিত করেন। আর ‘গ্লাস ক্লিফ’ ধারণার উদাহরণ হলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। দেশটির নড়বড়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। পরে পদত্যাগও করেন। এসব ব্যর্থতার ঘটনায় নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা আরও কমে যায়।

আশা বেঁধে রাখি

অনেক কর্মক্ষেত্র ও সংস্কৃতিতে লিঙ্গবৈষম্য বা পক্ষপাতপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে আছে। এর সমাধান এক দিনে হবে না। তবে আশার কথা যাচ্ছে, বড় বড় প্রতিষ্ঠানে গতি ধীর হলেও নারী নেতৃত্ব ক্রমশ বাড়ছে। আর নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থাও ধীরে ধীরে বাড়বে।

নারী নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ার রাজনৈতিক কারণও থাকতে পারে।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

কান্টার পাবলিকের গ্লোবাল সিইও মিশেল হ্যারিসন বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্য সত্যিই হতাশাজনক। তবে আমি আশাবাদী হওয়ার উপায় খুঁজে পেতে কাজ করে যাচ্ছি।’
মিশেল হ্যারিসন আরও বলেন, ‘এটা কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের ব্যক্তির ভূমিকার বিষয় নয়। নারী বা পুরুষ নেতৃত্ব ঠিক করার বিষয়ও এটি নয়। এটি মূলত আমাদের সমাজের ভেতরে থাকা নিয়মনীতি ও মূল্যবোধ পরিবর্তনের বিষয়। কিন্তু এ মুহূর্তে সেটা সম্ভব হবে না।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তন ও আর্থসামাজিক কারণ সম্ভবত ভবিষ্যতে এ বিশ্বাসের গতিপথ নির্ধারণ করবে।

বিবিসিকান্টার পাবলিক থেকে ভাষান্তর সুজন সুপান্থ।