প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ট্রাম্প সমর্থক বেড়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন দেশটির নাগরিকেরা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকেরাও ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। অন্যান্য বছর ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিলেও এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিচ্ছেন। তাঁদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার ঘটনা কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।
তাঁদের একজন আবদুল হামিদ। ২৮ বছর ধরে নিউইয়র্কে থাকেন। তিনি একজন নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট ভোটার। তবে এবার প্রথমবারের মতো ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমেরিকার অর্থনৈতিক উন্নতি এবং বিশ্ব শান্তির জন্য ট্রাম্প অপরিহার্য।’
নিউইয়র্কের আরেক বাসিন্দা আসলাম আহমাদ খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ওঠার জন্য ট্রাম্প ব্যাপক ভূমিকা রাখবেন বলে আমি আশাবাদী। তা ছাড়া তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, সারা বিশ্বের কোথাও যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করেননি, যা ডেমোক্র্যাটরা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন।’
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা হাসিনা বেগম বললেন ভিন্ন কথা। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি বরাবরই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিই। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কমলা হ্যারিস অভিবাসীদের জন্য কাজ করবেন, সেই বিশ্বাস আমার আছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে পেনসিলভানিয়া ও মিশিগান অন্যতম। সেখানকার কয়েকজন ভোটারের সঙ্গেও কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের।
পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গ এলাকায় বসবাস করেন রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, এখানকার পুরোনো বাসিন্দাদের বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ ও ব্যবসায়ী। তাঁরা বরাবরই রিপাবলিকান ভোটার। সম্প্রতি অনেক দেশের অভিবাসী এখানে আসছেন। এতে অভিবাসী ভোটারের সংখ্যা বেড়েছে। কমলা স্বল্প আয়ের মানুষদের কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছেন। তাই তাঁর পক্ষের ভোটার বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম-অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্য মিশিগান। সেখানকার বাংলা টাউন এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী বাংলাদেশি মৃদুল কান্তি সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এবারই প্রথম বাংলাদেশি ভোটাররা মিছিল করে আনুষ্ঠানিকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এর কারণ তুলে ধরে মৃদুল কান্তি সরকার বলেন, বর্তমান ডেমোক্র্যাট দল ফিলিস্তিনে হামলায় ইসরায়েলকে নগ্নভাবে সহযোগিতা করছে। সে কারণে প্রবাসীদের অনেকে ট্রাম্পকে ভোট দিচ্ছেন। অবশ্য অভিবাসীপ্রধান এই অঙ্গরাজ্যে এর আগে ডেমোক্র্যাটদেরই ভোট দিয়েছেন নানা বর্ণের মানুষজন। তাই এখানে কে জিতবেন, তা এখনই বলা মুশকিল।
এই প্রতিবেদক দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সেখানেও ট্রাম্পের সমর্থক বেশি দেখা গেছে।