জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের হাজারো নথির সন্ধান পাওয়ার দাবি এফবিআইয়ের

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাসে জন এফ কেনেডি মেমোরিয়াল প্লাজাফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজারো নথিপত্রের সন্ধান পেয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ মানতে গিয়ে তারা এসব নথির অনুসন্ধান শুরু করে।

গতকাল মঙ্গলবার এফবিআই জানিয়েছে, অনুসন্ধানে প্রায় ২ হাজার ৪০০টি নতুন তালিকাভুক্ত ও ডিজিটালাইজড নথি পাওয়া গেছে। এর আগে জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব নথির সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হতো না।

এফবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা নতুন করে পাওয়া নথিগুলোর বিষয়ে যথাযথ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। পাশাপাশি গোপন নথিকে প্রকাশ্যে আনার চলমান প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে এগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পাঠানোর কাজ করছে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জন এফ কেনেডি, তাঁর ছোট ভাই রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকারের প্রতীক মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার অসামান্য রেকর্ডসহ জন এফ কেনেডি হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট সব ফাইল প্রকাশ এবং জনসমক্ষে আনার নির্দেশ দেন। এরপরই এফবিআই নথি খুঁজে পাওয়ার ঘোষণা দিল।

ট্রাম্প সেই সময় বলেছিলেন, এটি একটি বড় ঘটনা। অনেক মানুষ বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে এর জন্য অপেক্ষা করছে। সবকিছু প্রকাশ করা হবে।

১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে টেক্সাসের ডালাসে হত্যা করা হয়। দশকের পর দশক ধরে তাঁর হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জরিপে এই হত্যাকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে ব্যাপক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।

২০২৩ সালের গ্যালাপ জরিপে ৬৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিক বলেছিলেন, লি হার্ভে অসওয়াল্ড একাই জন এফ কেনেডিকে হত্যা করেছিলেন বলে ওয়ারেন কমিশন যে ফয়সালা দিয়েছিল, তা তাঁরা বিশ্বাস করেন না।

ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত প্রার্থী এবং রবার্ট এফ কেনেডির ছেলে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ২০২৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, তাঁর চাচার হত্যাকাণ্ডে সিআইএ জড়িত থাকার ব্যাপারে ‘অকাট্য’ এবং ‘অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ রয়েছে।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদে এ হত্যাকাণ্ডের অবশিষ্ট সব রেকর্ড প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্যালোচনার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার ফাইল আটকে রাখার জন্য সিআইএ এবং এফবিআইয়ের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন। পরে অবশ্য তিনি প্রায় ২ হাজার ৮০০টি নথি প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন প্রায় ১৭ হাজার নথি প্রকাশ করেছে। সে সময় ৪ হাজার ৭০০টির কম নথি আংশিক কিংবা সম্পূর্ণরূপে আটকে রাখা হয়েছিল।

ন্যাশনাল আর্কাইভের মতে, জেএফকে রেকর্ডস আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ জন এফ কেনেডিকে হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার নথির ৯৯ শতাংশের বেশি প্রকাশ করেছে।