ক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কমে ৪৩ শতাংশে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো এতটা কমেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইপসসের করা এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। এমন সময় ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার এ চিত্র উঠে এল, যখন আমদানি শুল্ক নিয়ে তাঁর প্রশাসনের পদক্ষেপ এবং ইয়েমেনে সামরিক হামলার তথ্য ফাঁস নিয়ে মার্কিনদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

রয়টার্স/ইপসসের এই জরিপটি তিন দিন ধরে চালানো হয়েছে। জরিপের কাজ শেষ হয় গত বুধবার। এর আগে গত ২১ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নিয়ে আরেকটি জরিপ চালানো হয়। তখন ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ছিল ২ শতাংশ বেশি—৪৫ শতাংশ। আর ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পরপরই করা একটি জরিপ অনুযায়ী, তখন ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ছিল ৪৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন

এর আগে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পরপরই তাঁর জনপ্রিয়তা সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ ছিল। প্রথম মেয়াদে তাঁর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে তলানিতে পৌঁছায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে—৩৩ শতাংশ। সে হিসাবে প্রথম মেয়াদের বেশির ভাগ সময়ের তুলনায় বর্তমানে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেশি।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন। তাঁর সবচেয়ে কম জনপ্রিয়তা ছিল ৩৫ শতাংশ। গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে করা এক জরিপে ওই চিত্র উঠে এসেছিল।

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে এবারের জরিপে ট্রাম্পকে কম নম্বর দিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। এ ক্ষেত্রে তিনি ৩৭ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি–সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে ট্রাম্প যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে ৩০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন বাইডেনও।

যাঁরা জরিপে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই (৫২ শতাংশ) এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত যে বুধবার ট্রাম্প যে নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করছেন, তার একটি অংশে যানবাহন ও যানবাহনের যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে তাঁদের কাছের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আর বাকিরা বলেছেন, শুল্ক বাড়ানোর ফলে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।

তবে জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মার্কিন এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক। ওই অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, শুল্ক আরোপের ফলে ক্ষতি হবে—এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন তাঁরা।

আরও পড়ুন

সিগন্যাল নিয়ে উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গোপনীয়তা রক্ষায় ট্রাম্প প্রশাসনের ত্রুটি আছে বলে মনে করেন জরিপে অংশগ্রহণকারীরা। গত সপ্তাহে ইয়েমেনে হামলার একটি পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভুলে ফাঁস হয়ে যায়। মেসেজিং গ্রুপ সিগন্যালে তাঁদের এ–সংক্রান্ত বার্তা আদান–প্রদানের সময় ফাঁসের এ ঘটনা ঘটে। গ্রুপটিতে একজন সাংবাদিককে যুক্ত করা হয়েছিল।

জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৭৪ শতাংশ ব্যক্তি মনে করেন, মেসেজিং অ্যাপে ইয়েমেনে হামলার পরিকল্পনা এভাবে আলোচনা করাটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড। এমন ধারণা জরিপে অংশ নেওয়া ৯১ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৫৫ শতাংশ রিপাবলিকানেরও। অপর দিকে মাত্র ২২ শতাংশের মতে এটি কোনো ক্ষতিকর বিষয় নয়। আর ৭০ শতাংশ এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত যে ওই ঘটনার দায়ভার ট্রাম্পের নেওয়া উচিত।