যৌন সহিংসতার অভিযোগকারী নারীকে অর্ধলাখ ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ
হোয়াইট হাউসের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ তাঁর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার অভিযোগকারী এক নারীকে অর্থ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে হেগসেথের মনোনয়ন নিশ্চিত করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে প্রক্রিয়া চলমান থাকার মধ্যে একজন সিনেটরকে দেওয়া এক লিখিত জবাবে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
লিখিত জবাবের একটি অনুলিপি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, হেগসেথ জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ওই অভিযোগে তিনি অভিযোগকারী নারীকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হোটেলকক্ষে তাঁর ওপর যৌন সহিংসতা চালান হেগসেথ। এর আগে হেগসেথ তাঁর মুঠোফোন নিয়ে নেন ও কক্ষের দরজা আটকে দেন। এ সময় তাঁকে বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি। ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর কয়েক বছর পর হেগসেথ তাঁকে ৫০ হাজার ডলার দেন।
ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনকে ওই লিখিত জবাব দিয়েছেন পিট হেগসেথ। এর আগে মনোনয়ন যাচাই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওয়ারেন তাঁর কাছে বাড়তি প্রশ্ন রেখেছিলেন।
এদিকে, গতকাল হেগসেথের আইনজীবী টিমোথি পার্লাটোর অভিযোগকারীকে দেওয়া ডলারের অঙ্ক নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। লিখিত জবাব প্রকাশ হওয়ার আগে এটি অজানা ছিল।
গত নভেম্বরে এ আইনজীবী নিশ্চিত করেছিলেন, হেগসেথ ও অভিযোগকারীর মধ্যে সমঝোতামূলক আর্থিক লেনদেন ঘটেছিল।
ইতিমধ্যে, গত সপ্তাহে কংগ্রেসের সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের দেওয়া মনোনয়ন নিশ্চিত করা সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ নেন হেগসেথ। সেখানে সিনেটরদের কাছে দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘মিথ্য অভিযোগ’ তোলা হয়েছিল এবং তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন।
আজ শুক্রবার সিনেটে চূড়ান্ত দফা ভোটাভুটিতে হেগসেথের মনোনয়নসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঠিক এর আগ দিয়ে যৌন সহিংসতার অভিযোগকারী নারীকে তাঁর ওই অর্থ দেওয়ার কথা জানা গেল।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হোটেলকক্ষে তাঁর ওপর যৌন সহিংসতা চালান হেগসেথ। এর আগে হেগসেথ তাঁর মুঠোফোন নিয়ে নেন ও কক্ষের দরজা আটকে দেন। এ সময় তাঁকে বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি। ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর কয়েক বছর পর হেগসেথ তাঁকে ৫০ হাজার ডলার দেন।
গত নভেম্বরে নারীর অভিযোগ নিয়ে পুলিশের প্রকাশ করা এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়। তবে হেগসেথ পুলিশকে বলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের ঘটনাটি ছিল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে। কোনো ত্রুটি করার কথাও অস্বীকার করেন তিনি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে হেগসেথের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট সিনেটররা। উদ্বেগ জানিয়েছেন দুজন রিপাবলিকান সিনেটরও।
নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথকে মনোনীত করেন। তবে হেগসেথের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন ও অতিরিক্ত মদ পানসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ হতে থাকে। অতিসম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগও উঠেছে।
হেগসেথ বারবারই মদপানসহ অসদাচরণের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, নিয়োগ নিশ্চিত হলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সময় তিনি মাদক নেবেন না।
এসব অভিযোগ ওঠার বিষয়টি হেগসেথের নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সে রকম কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাঁর নিয়োগ ঠেকাতে হলে সিনেটের চার রিপাবলিকান সদস্যকে দলের বিরুদ্ধে যেতে হবে।