জাতিসংঘে মার্কিন দূত হিসেবে স্টেফানিককে দেওয়া মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প
জাতিসংঘে মার্কিন দূত হিসেবে নিযুক্ত করতে এলিস স্টেফানিককে দেওয়া মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মনে করেন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নিতে প্রতিনিধি পরিষদে তাঁদের যে সামান্য ব্যবধানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তা ধরে রাখা জরুরি। গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব কথা বলেছেন।
প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্য এলিস স্টেফানিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। গত নভেম্বরে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে স্টেফানিককে জাতিসংঘের দূত হিসেবে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। স্টেফানিকের সে মনোনয়ন বাতিল হতে পারে বলে প্রথম সিবিএস নিউজ খবর প্রকাশ করেছিল।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘কংগ্রেসে প্রতিটি রিপাবলিকান আসন ধরে রাখা আমাদের জন্য অপরিহার্য। সেখানে খুব বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় আমি এলিসের আসনে অন্য কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিতে চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের খুব সামান্য ব্যবধানের (২১৮-২১৩) সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। চারটি আসন ফাঁকা। এমন অবস্থায় আসন ধরে রাখাকে জরুরি বলে মনে করছেন রিপাবলিকানরা।
ফক্স নিউজের ‘হ্যানিটি’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টেফানিক বলেছেন, গতকাল ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কয়েক দফায় আলোচনা হয়েছে।
জাতিসংঘের মার্কিন দূত হিসেবে স্টেফানিকের নিয়োগ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গত ৩০ জানুয়ারি সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি তাঁকে জাতিসংঘের দূত হিসেবে অনুমোদন দেয়। তাঁকে কিছুসংখ্যক ডেমোক্র্যাট সদস্যও ভোট দিয়েছিলেন। পুরো সিনেট সহজেই তাঁকে অনুমোদন দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে নিয়োগ পাওয়া মার্কিন দূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড গত জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে মার্কিন কূটনীতিক ডরোথি শিয়া জাতিসংঘে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন দূত হিসেবে কাজ করছেন। এখন স্টেফানিকের বদলে ট্রাম্প কাকে বেছে নেবেন, তা এখনো জানা যায়নি।
ট্রাম্প বলেছেন, জাতিসংঘে ভালো কাজ করার মতো আরও অনেকে আছেন।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়ে থাকে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা দাতাদের মধ্যে একটি ছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের সংস্থাগুলোতে কোটি কোটি ডলারের বিদেশি সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এখনো ট্রাম্প কিংবা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেননি।
গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বন্ধ করে দেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনি ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএয়ের জন্য তহবিল বরাদ্দ স্থগিত রাখার মেয়াদ বাড়ান তিনি। জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো নিয়েও পর্যালোচনা করার আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বের হয়ে আসতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প।