মাইলের পর মাইল লম্বা রেললাইন। এর চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে হাজার হাজার পরিত্যক্ত কাগজের বাক্স, প্যাকেট ও পণ্যের মোড়ক। এর মাঝ দিয়ে চলছে ট্রেন। দৃশ্যটি দেখলে কোনো গরিব দেশের কথা হয়তো প্রথমে মাথায় আসবে। তবে যদি বলা হয়, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের, তাহলে তো অবাক হতেই হয়!
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন গত শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পরিত্যক্ত এসব কাগজের বাক্স, প্যাকেট ও পণ্যের মোড়ক রেললাইনে ফেলে গেছে চোরের দল। পণ্যবাহী ট্রেন থেকে চুরির পর দামি মালামাল নিয়ে গেছে তারা। ফেলে গেছে মোড়ক। কী নেই সেখানে, বিশ্বখ্যাত পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান ইউপিএস, আমাজন, ফেডএক্সের মোড়কও আছে। তা জমতে জমতে ভরে গেছে চারপাশ। চুরি ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে হলিউডের অবস্থান। এ জন্য শহরটির খ্যাতি বিশ্বজোড়া। রঙিন এই শহরে ট্রেনে চোরের উৎপাত ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম রেলপথ পরিচালনাকারী কোম্পানি ইউনিয়ন প্যাসিফিক গত মাসে লস অ্যাঞ্জেলেস ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নিকে একটি চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত বছর রেলে চুরির এসব ঘটনা আগের তুলনায় ১৬০ শতাংশ বেড়েছে। বেশির ভাগ সময় চলন্ত ট্রেনের পণ্যবাহী কনটেইনার ভেঙে চুরি করে চোরেরা। চুরির ঘটনায় লাগাম টানা সম্ভব না হলে প্রতিষ্ঠানটি লস অ্যাঞ্জেলেসে কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অবশ্য বসে নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ে সন্দেহভাজন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তবে ইউনিয়ন প্যাসিফিক বলেছে, এটা যথেষ্ট নয়।
প্রতিষ্ঠানটির আওতায় ৩২ হাজার মাইলের বেশি রেলপথ রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরও চুরি ঠেকাতে গলদঘর্ম হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।
ইউনিয়ন প্যাসিফিকের মতে, রেলে পণ্য চুরি ঠেকাতে বিদ্যমান আইন জোরালো নয়। আটক হওয়া ব্যক্তিরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজত থেকে বেরিয়ে আসছেন। এরপর আবার চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। এতে সমস্যার টেকসই সমাধান হচ্ছে না।