আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ। দুটি নির্বিচার গুলির ঘটনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আমাদের জীবনের জন্য পদযাত্রা (এমএফওএল)’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। খবর বিবিসির।
দেশজুড়ে কয়েক শ পদযাত্রায় অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের হাতে ‘গুলি থেকে বাঁচতে চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। আগ্নেয়াস্ত্র নিরাপত্তা আইন পাসে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে এই আহ্বান সত্ত্বেও অস্ত্র আইনে কোনো ধরনের পরিবর্তন রিপাবলিকানরা আটকে দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
টেক্সাসের উভালদে শহরের রব এলিমেন্টারি স্কুলে গত ২৪ মে নির্বিচার বন্দুক হামলার ঘটনায় ১৯ শিশুসহ ২১ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগেই নিউইয়র্কের বাফেলোয় একটি সুপারমার্কেটে অপর এক বন্দুক হামলায় ১০ জন নিহত হন।
এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবি নতুন করে গতি পায়। আগ্নেয়াস্ত্র নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন এমএফওএল প্রতিষ্ঠা করেন ২০১৮ সালে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন। পার্কল্যান্ডের একটি হাইস্কুলে ওই হামলায় ১৭ জন নিহত হন। গতকাল শনিবার তাঁরা জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগোসহ দেশজুড়ে প্রায় ৪৫০টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সংগঠনটি বলছে, জনগণের প্রাণহানি চলতে থাকায় রাজনীতিকদের আর নিষ্ক্রিয় থাকতে দেবে না তারা। রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিকার ভূমিকার কারণেই আমেরিকানরা খুন হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছে এমএফওএল।
এক বিবৃতিতে এমএফওএল পর্ষদের সদস্য ট্রেভন বোসলি বলেন, ‘যখন মানুষ অনবরত প্রাণ দিয়ে যাচ্ছে, এ অবস্থায় আমরা আপনাদের নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ দেব না।’
ওয়াশিংটন ডিসির বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন পার্কল্যান্ড বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ডেভিড হগ। তিনি বলেন, ‘উভালদেতে শিশুদের হত্যার ঘটনায় আমাদের মধ্যে ক্ষোভ ও পরিবর্তনের দাবি ওঠা উচিত। অন্তহীন বিতর্ক আর নয়, এখনই উচিত পরিবর্তনের দাবি ওঠা।’
গার্নেল হুইটফিল্ডের ৮৬ বছর বয়সী মা ১৪ মে নিউইয়র্কের বাফেলোয় বর্ণবাদী বন্দুক হামলায় নিহত হন। উপস্থিত জনতাকে তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে ন্যায়বিচারের দাবিতে এসেছি। যৌক্তিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের দাবি তুলতে যাঁরা যথেষ্ট সাহসী, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে আমরা এখানে এসেছি।’
এমএফওএলের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে—অ্যাসল্ট আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করা, বন্দুক কিনতে আগ্রহী ব্যক্তিদের অতীত বৃত্তান্ত যাচাই এবং অস্ত্রের মালিকদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে জাতীয়ভাবে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ।