ছয় মাসে পাঁচটি নিউইয়র্কের সমান বন উজাড় আমাজনে

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমাজনের ৩ হাজার ৯৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বন উজাড় হয়েছে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আশঙ্কাজনক হারে উজাড় হচ্ছে আমাজন বন। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস বা জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই বনের যে পরিমাণ উজাড় হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পাঁচ গুণের সমান। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (আইএনপিই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আমাজনে বন উজাড়ের এ হার প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। খবর এনডিটিভির

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে আইএনপিআই জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমাজনের ৩ হাজার ৯৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বন উজাড় হয়েছে। আয়তনের দিক থেকে যা নিউইয়র্কের পাঁচ গুণের সমান। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বন উজাড়ের এই পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে আমাজনের ৩ হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বনভূমি উজাড় হয়েছিল।

২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে আমাজনে বনভূমি উজাড়ের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে আইএনপিআই। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এর পর থেকে আমাজনে এবারই (চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে) সবচেয়ে বেশি বন উজাড় হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুধু গত জুনেই এই বনের ১ হাজার ১২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা উজাড় হয়েছে, যা চলতি বছর কোনো একক মাসে সবচেয়ে বেশি।

আমাজন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট। আমাজনে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও পশুপাখি রয়েছে; পাশাপাশি ১০ লাখ আদিবাসীর বসতি সেখানে। কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতেও বড় ভূমিকা রাখছে বনাঞ্চলটি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ রয়েছে। এর মধ্যেই আমাজনে বন উজাড়ের ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়েছে। এতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বেড়ে যাওয়ার হার ত্বরান্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশবাদীদের।

আরও পড়ুন

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গত পাঁচ দশকে আমাজনের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকার বন উজাড় হয়ে গেছে। কৃষিকাজ ও পশুপালনের জন্য স্থানীয়দের অনেকেই বনের গাছ কেটে জমি খালি করছেন। তবে বন উজাড়ের পেছনে ভূমিদস্যু ও বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেন অনেক পরিবেশবাদী।

আরও পড়ুন

ব্রাজিলে বনভূমি ধ্বংস বেড়েছে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর আমলে। আমাজনে বন কেটে চাষাবাদের ওপর জোর দিয়ে আসছেন তিনি। তৎপর হয়েছেন এই অঞ্চলের খনিজ সম্পদ আহরণের বিষয়েও। আমাজন রক্ষায় বলসোনারো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ পরিবেশবাদীদের। তাঁদের অভিযোগ, তিনি (বলসোনারো) আমাজনের গুরুত্ব ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়গুলো উপেক্ষা করছেন। ভূমিদস্যুদের সুরক্ষা দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন