করোনায় মৃত্যুতে ভারতকে ছাপিয়ে গেল মেক্সিকো
করোনাভাইরাসে (কোভিড–১৯) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতে ভারতকে টপকে গেল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ মেক্সিকো। এই মহামারিতে মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বে দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী এই লাগাম টেনে ধরতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। এনডিটিভির খবর।
মেক্সিকোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার করোনায় নতুন করে ১ হাজার ৫০৬ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৫ জনের মৃত্যু হলো। একই দিন সংক্রমিত হন ১৮ হাজার ৬৭০ জন। ফলে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৫১৯।
বিশ্বে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়া শুরু করলে বিভিন্ন দেশ কঠোর লকডাউনের মতো পদক্ষেপ নেয়। তবে মেক্সিকোতে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর এমন ব্যবস্থায় বাদ সাধেন। সংক্রমণ শুরুর আগে দুর্নীতি দূরীকরণের মতো যেসব বিষয়ে তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন, সংক্রমণ–পরবর্তী সময়েও সেসব বিষয়ে মনোযোগ নিবদ্ধ রাখেন তিনি। এখন তিনি নিজেও সংক্রমিত।
গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ওব্রাদর বলেছিলেন, ‘কোভিড–১৯ মহামারি অনেক দুঃখ, বেদনা ও ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর চেয়েও ক্ষতিকর ও ভয়ানক হয়ে উঠেছে দুর্নীতি। এই দুর্নীতি কোনো রোগের চেয়েও খারাপ।’ দেশে করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে রেকর্ড হওয়ার পরদিনই এ মন্তব্য করেন তিনি।
করোনার সংক্রমণজনিত মৃত্যুতে মেক্সিকো যখন ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে যায়, তখন লোপেজ ওব্রাদর ওই সব দেশের অল্প জনসংখ্যার ওপরে জোর দেন। কিন্তু এখন মৃত্যুতে ভারতকেও ছাপিয়ে গেল মেক্সিকো। অথচ দেশটির জনসংখ্যা ভারতের জনসংখ্যার ১০ ভাগও না।
ভারতে এখন সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই কমছে। চলতি মাসের শুরুতে সারা দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে দেশটি। অন্যদিকে মেক্সিকো গত মাসের শেষ দিকে ফাইজারের টিকা প্রদান শুরু করেছে। কিন্তু দেশটিতে সংক্রমণ বা মৃত্যু কোনোটি কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। করোনায় মৃত্যুর দিক থেকে বর্তমানে মেক্সিকোর আগে রয়েছে শুধু ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, মেক্সিকোয় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জ্ঞাত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি।
মেক্সিকোয় করোনা সংক্রমণের বিষয়টি তদারকি করছেন উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো লোপেজ–গেটেল। তিনি জনগণকে বাড়িতে অবস্থান, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘোষণার আগের দিনগুলোতেও প্রেসিডেন্ট ওব্রাদর প্রকাশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন এবং মাস্কবিহীন অবস্থায় ছবিতে ধরা পড়েছেন।