জলবায়ু অর্থায়নে জি-২০ দেশগুলোর ঐকমত্য

জি২০ সম্মেলনের একটি ব্যানারছবি : রয়টার্স

ব্রাজিলে চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনা ছড়াতে পারে। তবে সূত্রগুলো জানিয়েছে, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে একটি ‘নাজুক ঐকমত্যে’ পৌঁছেছে শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশগুলো। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে এখনো এ বিষয়ে ঐকমত্য অধরাই রয়ে গেছে।

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রিও ডি জেনিরোতে পৌঁছেছেন সদস্যদেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা। আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার দারিদ্র্য ও ক্ষুধা থেকে শুরু করে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত সময় পার করবেন তাঁরা।

এ ছাড়া ক্রমেই আরও মারাত্মক রূপ নেওয়া ইউক্রেন যুদ্ধের লাগাম কীভাবে টানা যায়, সে বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পাবে। এরপরও বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে জি-২০ সদস্যদেশগুলোর প্রচেষ্টার ওপর জাতিসংঘের চলমান জলবায়ু সম্মেলনের নজর থাকবে।

গত সপ্তাহে বাকুতে জাতিসংঘের কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ২৯ (কপ২৯) সম্মেলন শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২২ নভেম্বর। এ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য জলবায়ু অর্থায়নে শত শত কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এর মধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশের নেতারা রিওতে জড়ো হয়েছেন, কার্যত যাঁরা এ অর্থ কোথায় ও কীভাবে ব্যয় হবে তা ঠিক করবেন।

বৈশ্বিক অর্থনীতির ৮৫ শতাংশই জি-২০ দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এসব দেশই জলবায়ু অর্থায়নে ভূমিকা রাখা বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সবচেয়ে বড় তহবিল জোগানদাতা।

দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান

রিও ডি জেনিরোতে সাংবাদিকদের জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই জি-২০–এর ওপর নজর থাকছে। এসব দেশ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্যাসগুলোর ৮০ শতাংশ নিঃসরণ করে থাকে।’

বাকুতে চলমান কপ২৯ সম্মেলনের সংলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। জলবায়ু পরিবর্তনে আরও পদক্ষেপ নিতে জি-২০ দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গুতেরেস বলেন, ‘এখন বিশ্বের বড় অর্থনীতির ও বেশি গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলোর নেতাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।’

জলবায়ু অর্থায়নে অনুরোধ জানিয়ে জি-২০ দেশগুলোর নেতাদের প্রতি গত শনিবার একটি চিঠি লেখেন জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সিমন স্টিয়েল। এতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুদান বাড়ানো এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

রিও সংলাপের সঙ্গে যুক্ত কূটনীতিকদের মতে, গত সপ্তাহে কপ২৯ সম্মেলন শুরু হওয়ার পর যে সংগ্রাম চলে আসছে, ঠিক একই বিষয় জি-২০ সংলাপের মূল বিষয়ে পরিণত হতে পারে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শিল্পোন্নত দেশ, বহুজাতিক ব্যাংক ও বেসরকারি খাতগুলো থেকে কী পরিমাণ অর্থ দেওয়া উচিত, কপ২৯ সম্মেলনকে অবশ্যই এ নিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা উচিত। সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ তহবিলের পরিমাণ অন্তত এক লাখ কোটি (ট্রিলিয়ন) ডলার হওয়া উচিত।