লুলার নিন্দার পরে ব্রাজিলে গণহারে আটক
ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সমর্থকদের হামলার পর প্রায় দেড় হাজার লোককে আটক করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহ পর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। লুলা এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী আচরণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন। ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তি দেবেন বলেছেন। এরপরই গণহারে আটক করা হয়।
গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি বলসোনারো। ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেই এ বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। গতকাল সোমবার পেটে ব্যথা নিয়ে ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলসোনারো।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সমর্থনে ব্রাজিলের অন্যতম বড় শহর সাও পাওলোতে হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করেছে। দেশটির বিখ্যাত সড়ক পলিস্তা অ্যাভিনিউয়ের একাংশ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেখানে সমবেত মানুষ গান গাইছে, নাচছে, ন্যায়বিচারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছে।
ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট লুলা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
গতকাল সকালে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে বলসোনারোর সমর্থকদের একটি শিবিরে ভাঙচুর চালান সশস্ত্র কর্মকর্তারা। গতকাল ১ হাজার ২০০ জনকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগের দিন ৩০০ জনকে আটক করা হয়।
দেশটির আইনমন্ত্রী ফ্লাভিও দিনো বলেছেন, ৪০টি বাস জব্দ করা হয়েছে। এসব বাসে বিক্ষোভকারীদের রাজধানীতে নিয়ে আসা হয়।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্ট ভবনে সংস্কার ও পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। কংগ্রেস ভবনের কাছে হামলায় মূল্যবান অনেক চিত্রকর্মও নষ্ট হয়ে গেছে। ব্রাজিলের বিভিন্ন সড়কে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বলসোনারো নিজেও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। টুইটারে তিনি হামলার দায় অস্বীকার করেন। হামলার ছয় ঘণ্টা পর টুইট করেন বলসোনারো।
হামলার ঘটনায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ার গভর্নর ইবানেইস রোচাকে দায়িত্ব থেকে ৯০ দিনের জন্য অব্যাহতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন রোচা।
ব্রাজিলের বিভিন্ন শহরে বলসোনারোর সমর্থকেরা শিবিরে রয়েছেন। সমর্থকেরা চান সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
অনেক বিক্ষোভকারী বলসোনারোর পরাজয়ে ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা চান প্রেসিডেন্ট লুলা কারাগারে ফেরত যান। ২০১৭ সালে দুর্নীতির দায়ে ১৮ মাস কারাগারে ছিলেন লুলা।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এই হামলাকে ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা ওই দিন হামলা চালান। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ট্রাম্পকে পরাজিত করার পর শপথ নেন জো বাইডেন।