বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে দলে সংস্কার করছে পিটিআই

পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান। লাহোরে, ১৭ মার্চ ২০২৩ফাইল ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) গুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিক কমিটিগুলো ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এসব কমিটি থেকে শাহবাজ গিলের মতো বিতর্কিত শীর্ষ নেতাদের বাদ দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। দলটির ভেতরের খবর জানেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানা গেছে।

বিষয়-সংশ্লিষ্ট পিটিআই নেতাদের মতে, দলে কী কী পরিবর্তন আনা হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন কারাবন্দী ইমরান খান। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে থাকলেও দলের যেকোনো ধরনের বড় পরিবর্তনের জন্য তাঁর মতামত জরুরি।

পরিবর্তনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি নিজেদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে পিটিআই। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এতে জুলফি বুখারি, সাজ্জাদ বুরকি, শাহবাজ গিল এবং আতিফ খানের মতো বিখ্যাত নেতারা ছিলেন।

পিটিআই নেতা গহর খানের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিদেশবিষয়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। ইমরান খানের পরামর্শেই তা করা হয়েছিল।

বিদেশবিষয়ক কমিটি বাতিলের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পিটিআইয়ের কিছু প্রখ্যাত নেতা উদ্বেগ জানিয়ে ইমরান খানের কাছে গোপনে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। বিদেশবিষয়ক কমিটি নানা কাজের বিষয়ে যেভাবে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিল, তা নিয়ে এবং দলটির বিদেশ শাখা ‘পিটিআই চ্যাপ্টারস’–এর বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ ছিল।

আরও পড়ুন

অভিযোগ উঠেছিল, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিষয়ে কী মনোভাব গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে পিটিআইয়ের ইউএস চ্যাপ্টার বিভক্ত হয়ে পড়ছিল। দলের কিছু সদস্য সেনাবাহিনীর বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। অন্যরা নমনীয় অবস্থানে ছিলেন। তাঁরা সংলাপের পক্ষে কথা বলছিলেন।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পাকিস্তানের কিছু চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী ইসলামাবাদ সফর করেন। তাঁরা সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। পরে তাঁরা রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী ইমরান খানের সঙ্গেও দেখা করেন। এর পর থেকেই মূলত পিটিআইয়ের অভ্যন্তরে ফাটল গভীর হতে থাকে।

আরও পড়ুন

পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতাদের অনেকে মনে করেন, সুযোগসন্ধানীদের বাদ না দিলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপ সম্ভব নয়। তাই তাঁদের পরামর্শ, এটা সম্ভব করতে পিটিআইয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শাখার নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ, তারা প্রকাশ্যে অব্যাহতভাবে সেনাবাহিনীর সমালোচনা করছে।

এই পরিস্থিতিতে পিটিআইয়ের শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তনের যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তা মূলত দলটির বৃহত্তম কৌশলের অংশ। দলটির আগামীর রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে, কীভাবে তা বিকশিত হবে, তা এই সংস্কারের ওপর নির্ভর করছে। এসব সংস্কারের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানকে কারাগার থেকে মুক্ত করা।