ইমরানের মুক্তির দাবিতে বড় বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের ‘অবিলম্বে কারামুক্তির’ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে পিটিআইয়ের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ।
গতকাল রোববার ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে বড় এই সমাবেশ আয়োজিত হয়।
গত বছরের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে ইমরান। তাঁর মুক্তির দাবিতে সমর্থন তৈরির জন্য দলের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। গত জুলাই মাসে ইদ্দত মামলায় (ইসলামি বিধিবহির্ভূত নিকাহ) দেশটির একটি জেলা ও দায়রা আদালত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির আবেদন গ্রহণ করেন। এরপর তাঁদের মুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল।
কিন্তু এরপর আবার ইমরানকে তোশাখানা মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। আগের দুটি তোশাখানা মামলায় তাঁর সাজা ইতিমধ্যে স্থগিত করা হয়েছিল, যখন তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে সাইফার মামলায় খালাস পেয়েছিলেন।
এর আগে কয়েক মাস ধরে পিটিআই রাজধানীতে জনসভার অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
গতকালের সমাবেশ শুরু হয় পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহারের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, ‘পিটিআই নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা আজ জড়ো হয়েছেন দেশে আইনের শাসন ও সংবিধানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, কোনো বাধা তাঁদের দমাতে পারবে না।
পিটিআইয়ের এই নেতা বলেন, ‘আমরা ইমরান খানের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করব।’
সমাবেশে পিটিআই নেতা আলী মোহাম্মদ খান অবিলম্বে ইমরান খানের মুক্তি দাবি করেন।
সমাবেশের শেষের দিকে পুলিশের সঙ্গে পিটিআইয়ের কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে তা দেখা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সমাবেশ শেষ করতে পিটিআইকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দলটি আগে থেকে ঠিক করে দেওয়া সেই সময়ের মধ্যে সমাবেশ শেষ করেনি। তাই পুলিশ পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীদের সমাবেশস্থল থেকে হটিয়ে দেয়। এতে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে বাধ্য হয়।
ইসলামাবাদের ২৬ নম্বর চাঙ্গি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে পিটিআইয়ের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ জানায়, পিটিআইয়ের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার (এসএসপি) শোয়েব খানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ওই এলাকা থেকে পিটিআইয়ের কর্মীদের হটিয়ে দেয়।
পিটিআইয়ের নেতা হাম্মাদ আজহার এক্স বার্তায় পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডকে ‘বোকামিপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, ‘শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণকারীদের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করা পুলিশের বোকামি ছিল।’